
শম্ভুনাথ সেনঃ
কৃষি নির্ভর বীরভূম। আর বীরভূমের কৃষি মূলত বৃষ্টি নির্ভর। এবার বর্ষার সময় তেমনভাবে বৃষ্টি হয়নি। বর্ষা ঋতুর দেড় মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পর অসময়ের বৃষ্টিপাতেও জেলার প্রায় ৮০ শতাংশ জমিতে ধান চাষ হয়েছে। মাঠে মাঠে এখন কোথাও বা সবুজ কোথাও বা পাকাধানের সমারোহ। অনাবৃষ্টির কারণে মুখ শুকিয়ে যাওয়া কৃষকদের কিছুটা হলেও এখন মুখে হাসি ফুটেছে। আর তেমন সময়ে আজ ১২ নভেম্বর “বীরভূম জেলা ধান্য ব্যবসায়ী সমিতি’র” ৭ম জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো জেলা সদর সিউড়ির ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। সিউড়ি, রামপুরহাট, বোলপুর, সাঁইথিয়া, দুবরাজপুর, নলহাটি, মুরারই এমন বিভিন্ন প্রান্তের অন্তত দুই হাজারেরও বেশি সদস্যের উপস্থিতিতে উৎসাহ আর উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বেলা দশটা নাগাদ এই সম্মেলন শুরু হয়। পতাকা উত্তোলন, শহীদ বেদীতে মাল্যদানের পরেই শুরু হয় মঞ্চের অনুষ্ঠান।

জেলা প্রতিনিধি ছাড়াও বাংলার বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ এমন বিভিন্ন জেলার ধান্য ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃত্ব এদিন উপস্থিত ছিলেন। মাঙ্গলিক প্রদীপ প্রজ্জলনের পরেই উদ্বোধনী সংগীত এবং ধান্য ব্যবসায়ী সমিতির বিদায়ী সম্পাদক তারক চন্দ্র মণ্ডল তার সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পেশ করেন। তার আগেই বক্তব্য রাখেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র ঘোষ, রাজ্য সম্পাদক ছন্দক মহাপাত্র, রাজ্য কমিটির কনভেনার বিশ্বজিৎ মল্লিক প্রমুখ। বীরভূম জেলা নেতৃত্ব রবি দত্ত তার বক্তব্যে সংগঠনের ইতিহাস এবং স্বচ্ছ ভাবে ধান ব্যবসা করার জন্য প্রতিনিধি সদস্যদের আহ্বান জানান। কৃষকদের প্রধান ফসল ধানের ন্যায্য দাম দিতে হবে, কৃষকের প্রয়োজনীয় সার, কীটনাশক, সেচের ব্যবস্থা ও বিদ্যুতের ভর্তুকি দিতে হবে, ফুড প্রক্রিওরমেন্ট আলোচনা সভায় ধান্য ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধি নিতে হবে, ধানের সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি, সব কৃষি জমিতে সেচের ব্যবস্থা এমন নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে বিভিন্ন বক্তারা এদিন বক্তব্য তুলে ধরেন। পণ্য পরিবহনের সমস্যা নিয়ে এদিন আলোকপাত করা হয়।

সংগঠনের প্রবীণ নেতৃত্ব তথা সাংবাদিক পূর্ণ দত্ত (৭৭) অসুস্থ শরীর নিয়ে এদিন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। জেলা নেতৃত্ব তাকে উত্তরীয় ও ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। উল্লেখ্য, জেলা সম্মেলনের পরে পরেই আগামী ৫ ডিসেম্বর “রাজ্য সম্মেলন” অনুষ্ঠিত হবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর জেলা পরিষদ হলে। এ তথ্য উপস্থিত প্রতিনিধি সদস্যদের জানানো হয়। এই সম্মেলনে বীরভূম ধান্য ব্যবসায়ী সংগঠনের আগামী পাঁচ বছরের জন্য সভাপতি ও সম্পাদক নির্বাচিত হন যথাক্রমে নবকুমার মণ্ডল ও নীলটু ওরফে ভোলা সাহা। এদিন কথার পাশাপাশি সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন আমন্ত্রিত শিল্পীরা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জেলার বিশিষ্ট নাট্য শিল্পী তথা নির্দেশক সুব্রত ঘটক।
