ইণ্ডাস জলচুক্তি স্থগিত হওয়ার ফলে পাকিস্তানের উপর কী প্রভাব পড়ছে?

নয়াপ্রজন্ম প্রতিবেদনঃ

ইণ্ডাস নদী নেটওয়ার্ক—যার অন্তর্গত ঝিলাম, চেনাব (চন্দ্রভাগা), রাবি (ইরাবতী), সাতলুজ (শতদ্রু) এবং বিয়াস (বিপাশা) নদী—পাকিস্তানের প্রধান জলসম্পদ হিসেবে কাজ করে এবং কোটি কোটি মানুষের জীবিকা এই ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল। এই চুক্তি অনুযায়ী সিন্ধু অববাহিকার পূর্বদিকের ইরাবতী, বিপাশা, শতদ্রু নদীর জলের সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব ভারতের ৷ আবার পশ্চিম দিকের সিন্ধু, ঝিলম ও চেনাব- এই তিনটি নদীর জলের নিয়ন্ত্রণ পাকিস্তানের হাতে ৷ এই চুক্তি স্থগিত হওয়ায় পাকিস্তান ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে, কারণ দেশটি এই নদীগুলোর মোট জলপ্রবাহের প্রায় ৮০ শতাংশ পেত, যা বিশেষত পাঞ্জাব ও সিন্ধ প্রদেশে কৃষির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সেচ, কৃষিকাজ ও পানীয় জলের জন্য পাকিস্তান এই জল সরবরাহের উপর অনেকটাই নির্ভর করত। দেশের কৃষিক্ষেত্র জাতীয় আয়ের ২৩ শতাংশ অবদান রাখে এবং গ্রামীণ জনসংখ্যার ৬৮ শতাংশ মানুষকে জীবিকা দেয়।
ইণ্ডাস অববাহিকা থেকে প্রতি বছর প্রায় ১৫৪.৩ মিলিয়ন একর-ফুট জল আসত, যা কৃষিজমি সেচ এবং খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত জরুরি। এই জলপ্রবাহে বাধা পড়ায় পাকিস্তানের কৃষিক্ষেত্রে বড়সড় ধাক্কা লাগছে—যা তাদের অর্থনীতি এবং গ্রামীণ জীবিকায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। জল সরবরাহ কমে যাওয়ার ফলে ফসলের উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে, খাদ্য সংকট তৈরি হচ্ছে এবং কৃষিনির্ভর অঞ্চলে আর্থিক অনিশ্চয়তা বাড়ছে। পাকিস্তান আগে থেকেই জলসম্পদের সঙ্কট, যেমন ভূগর্ভস্থ জলের ঘাটতি, কৃষিজমিতে লবণাক্ততা এবং জল সংরক্ষণের সীমাবদ্ধতার মতো সমস্যায় ভুগছে।
দেশের জল সংরক্ষণের ক্ষমতাও অত্যন্ত সীমিত—মঙ্গলা ও তারবেলা বাঁধ মিলিয়ে মোট জীবন্ত জলাধারের পরিমাণ মাত্র ১৪.৪ মিলিয়ন একর-ফুট, যা বার্ষিক বরাদ্দের প্রায় ১০ শতাংশ। চুক্তি স্থগিত হওয়ার ফলে গ্যারান্টিযুক্ত জলপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে পাকিস্তান তাদের জলসম্পদ ব্যবস্থাপনায় আরও সঙ্কটে পড়েছে এবং বিকল্প ব্যবস্থাও সীমিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *