জীব জগতের কথা ভেবে নিজে হাতে নন্দন কানন বানাচ্ছেন সর্পবিদ দীনবন্ধু বিশ্বাস

দীপককুমার দাসঃ

ঘরের নাম রূপকথা। যেখানে সাময়িক আশ্রয় পেয়েছে বহু আহত, মুমুর্ষ পশু পাখি সরীসৃপ। সুস্থ হয়ে আবার তারা ফিরে গেছে অনুকূল পরিবেশে। বিপন্ন প্রাণীদের বন্ধু হয়ে উঠেছেন সিউড়ি সেহাড়াপাড়ার বাসিন্দা দীনবন্ধু বিশ্বাস। বিশিষ্ট সর্পবিদ তথা ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর সদস্য দীনবন্ধু বিশ্বাস এবার নিজে হাতে সাজিয়ে তুলছেন স্বপ্নের বাগান। নিজে একজন ভালো প্রতিমা শিল্পী ও।তার হাতের ছোঁয়ায় ও ভাবনায় প্রতিবার তৈরি হয় অজয়পুর হাইস্কুলের নজরকাড়া সরস্বতী প্রতিমা। এবার নিজের শিল্পীস্বত্বা দিয়ে তিনি তার বাড়িতে বানাচ্ছেন নন্দন কানন। সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির বাহারী গাছের পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন ফুল, ফলের গাছ। রয়েছে বিভিন্ন ক্যাকটাস ও অর্কিডের সম্ভার। সৌন্দর্য্য বাড়াতে ব্যবহার করছেন বেশ কয়েকটি ফসিলস্। নিজে হাতে তৈরি করেছেন শতাধিক সিমেন্টের টব। তার উপরে বসিয়েছেন ভাঙা মার্বেল পাথরের টুকরো। আর তাতেই নতূন রূপ পেয়েছে টবগুলো। বাগান জূড়ে বিভিন্ন জায়গায় সিমেন্টের বুদ্ধের মুখাবয়ব বানিয়েছেন। এছাড়াও নতুন কিছু মূর্তি ও ভাস্কর্যের কাজে নতুন রূপ দিচ্ছেন তার নিজে হাতে তৈরি করা বাগানকে।স্তম্ভের মতো কিছু কাঠামো বাগানের রূপকে আরো বাড়িয়ে তুলছে। পাখিদের কথা ভেবে বাগানের একদিকে লাগিয়েছেন ফলের গাছ। পাখিদের গরমে যাতে অসুবিধা না হয় তার জন্য তৈরি করেছেন অসাধারণ জলপাত্র। যেখানে তৃষ্ণা পেলে পাখিরা জল খেতে পারবে আবার স্নান ও করতে পারবে। কতদিন লাগবে বাগানের কাজ শেষ করতে?হাসতে হাসতে দীনবন্ধু বিশ্বাস জানান,এর কোনো শেষ নেই। যখনই সময় পাই তখনই লেগে পড়ি কাজে। নতুন নতুন ভাবনা ভিড় করে মনে। স্ত্রীও খুব সহযোগিতা করেন। আর বুদ্ধদেব শান্তির প্রতীক, তাই বাগান জূড়ে বিভিন্ন অবয়বে বুদ্ধের মুখাবয়ব সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করেছি।এই বাগান শুধু আমার নয়, এই বাগান পশু পাখি সবার। তারা বাঁচলে তবেই আমরা বাঁচবো। তাই জলাশয়ের পাশে ফুল, ফল, অর্কিড, ক্যাকটাসে নয়নাভিরাম বাগান সাজাচ্ছেন অজয়পুর হাইস্কুলের জীব বিজ্ঞানের শিক্ষক দীনবন্ধু বিশ্বাস। ডালিম পেয়ারা গাছে বসে শিষ দিচ্ছে দোয়েল,শ্যামা। ক্রিসমাস ট্রি, ফরকেরিয়া, রিওপ্ল্যান্ট, অক্সালিস, সাকুলেন্ট, স্নেক প্ল্যান্ট, অর্কিড, ঝুমকোলতা সহ নানা বাহারী গাছ ও তাদের অসাধারণ ভাবে উপস্থাপন, নানা শিল্পকর্ম অনন্য মাত্রা যোগ করেছে দীনবন্ধু বাবুর ভালোবাসার চিরসবুজ বাগানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *