বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে নিজস্ব সম্পত্তি উপহার দিলেন প্রবাসী বাঙালী প্রাক্তন কৃতি ছাত্র তথা বিজ্ঞানী, গবেষক অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়

সনাতন সৌঃ

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে প্রবাসী বাঙালী প্রাক্তন কৃতি ছাত্র তথা বিঞ্জানী গবেষক অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী নীতা মুখোপাধ্যায় নিজস্ব সম্পত্তি উপহার হিসেবে দান করলেন। সেই মতো তাঁরা বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ও ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব মানবেন্দ্রনাথ সাহার উপস্থিতিতে ৩১ আগষ্ট শান্তিনিকেতনের সীমান্তপল্লীতে অবস্থিত সমস্ত সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে দেন। এই সম্পত্তির যার বর্তমান বাজার মূল্য ১০ কোটি টাকা। এদিন থেকে বিজ্ঞানী অরবিন্দবাবুর দেয় সম্পত্তি সম্পূর্ণ অধিকার বিশ্বভারতীর কর্তৃপক্ষের হলো। এই সম্পত্তি হস্তান্তরের পর বিশ্বভারতীর প্রাক্তন কৃতি ছাত্র অরবিন্দবাবু বলেন, বিশ্বভারতী হলো শিক্ষা অর্জনের জন্য আমার সাধনাক্ষেত্র। আমার এই নিঃশর্ত দান গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে সমর্পণ করলাম, ওনার আদর্শে শিক্ষাতেই যেহেতু আমি আলোকিত ও প্রতিষ্ঠা হতে পেরেছি। এর জন্য আমি গর্ববোধ করছি। তিনি আরো বলেন, খুব কষ্ট করেই সুদূর মুর্শিদাবাদ থেকে এখানে এসে পড়েছি। এখানে অনেক কিছুই শিখতে পেরেছি। বিশ্বভারতী থেকে অনেক শৃঙ্খলাও শিখেছি। কবি গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আশির্বাদে আমি জীবনে অনেক কিছুই পেয়েছি এবং প্রতিষ্ঠিত হয়েছি। তাই আমার খুব ইচ্ছা ছিল আমাদের সব কিছুই বিশ্বভারতীকে দিয়ে যাবো। বাস্তবে সেকাজ সফল হলো। বিশ্বভারতীর একটা বড় কাজের জন্যই দান করলাম। আমার মনোবাসনা পূর্ণ হলো। এর জন্য চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। এবার আমরা নিশ্চিতে লন্ডনে ফিরে যাবো। ভবিষ্যতে আমার আরও একটি পরিকল্পনা আছে। প্রসঙ্গত বলা যায়, অরবিন্দবাবুর আদি বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার কাকগ্রামে। সেখান থেকে তিনি ১৯৫১ সালে শান্তিনিকেতন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠভবনে পড়াশোনা করতে আসেন। সেই বছরেই বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করার পর আরো উচ্চ শিক্ষার জন্যই তিনি পাড়ি দেন ইংল্যান্ডে। সেখানে তিনি মেটেরিয়াল সাইন্স নিয়ে গবেষণা করেন। তাঁর নামে সেখানে পেটেন্ট রয়েছে। লন্ডনে কর্মরত অবস্থায় ১৯৯৭ সালে দেশে ফিরে শান্তিনিকেতনের সীমান্তপল্লীতে একটি মনের মতো বাড়ী নির্মাণ করেন। প্রায় আড়াই বিঘা জমির উপর এই অট্টলিকা আছে। রয়েছে আউট হাউস, গোয়াল ঘর, লন, মাছের পুকুর ইত্যাদি। এই অট্টালিকা এখন বিশ্বভারতীর কর্তৃপক্ষের। অরবিন্দবাবুর বর্তমানে এক পুত্র ও এক কন্যা রয়েছে। তাঁরা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে অধ্যপনা করছেন। যার ফলে সিদ্ধান্ত নেন যে, তাঁদের শান্তিনিকেতনের নিজস্ব বসত বাড়িটি বিশ্বভারতীকে উপহার দেবেন। সেই মতো তিনি সুব্যবস্থা করলেন এবং নির্দ্বিধায় এত বড় সম্পত্তি নিঃশর্তে দান করলেন। এই মহৎ দানকে বিভিন্ন মহলে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *