বীরভূমের কালীপুজোঃ তারাপীঠের মাতারা শ্যামারূপে পুজিত হন

শম্ভুনাথ সেনঃ

শক্তি সাধনার পীঠস্থান বীরভূমের তীর্থভূমী তারাপীঠ। এই অমাবস্যায় প্রতিবছর মাতারা শ্যামারূপে পূজিতা হন। বীরভূমের তীর্থক্ষেত্র তারাপীঠে বছরভর ভক্তের ভিড়। উল্লেখ্য, তারাপীঠে আলাদাভাবে কোনো দেবীমূর্তির পূজা হয় না। তারামা কখনো দুর্গা রূপে, কখনো লক্ষ্মী বা নীল সরস্বতী, আবার কখনো জগদ্ধাত্রী রূপে পূজিতা হন। আর এই কার্তিকের অমাবস্যায় মা তারাকে সাজানো হয় শ্যামা রূপে। এদিন দূরদূরান্ত থেকে তারাপীঠে বহু ভক্ত-পুণ্যার্থীর সমাগম হয়। দীপাবলী উৎসবে রংবেরঙের আলোক মালায় সেজে ওঠে তারাপীঠ এলাকা। মায়ের মূল মন্দির চত্বর সাজানো হয় বিভিন্ন আলোক মালায়। তারাপীঠের বর্তমান মন্দিরটি ১৮১৮ খ্রীস্টাব্দে বীরভূমের মল্লারপুর গ্রামের দানবীর জগন্নাথ রায়ের দেওয়া অর্থে নির্মিত হয়েছে। প্রতিবছর কালীপুজোয় তারার অঙ্গে শ্যামার আরাধনা। এবারও সেই পুজো দেখতে বহু ভক্তের ভীড় জমে তারাপীঠে। দুপুর ২ টো ৩৪ মিনিটে শুরু হয় অমাবস্যা তিথি। অমাবস্যা তিথি শুরু হতেই মা তারাকে পুজো দেওয়ার হিড়িক পড়ে। পুজোর দিন ভোর চারটের সময় মা তারার শিলামুর্তিকে মহাস্নান করানো হয়। তারপর মা তারাকে রাজবেশে সাজিয়ে মঙ্গল-আরতি। এদিন ভক্তদের জন্য মন্দিরের দরজা খুলে দেওয়া হয়। ভোর থেকে মা তারাকে শ্যামা রূপে পুজো করা হয়। দুপুরে ভাত, পোলাও, ডাল, পাঁচ রকম ভাজা, পাঁচ রকম তরকারি, মাছ, বলির পাঁঠার মাংস, শোল মাছ পোড়া, চাটনি, পায়েস,পাঁচ রকম মিষ্টি ও কারন বারি দিয়ে মা তারাকে মধ্যাহ্ন ভোগ নিবেদন করা হয়। সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ আবার হয় সন্ধ্যা আরতি। তারপর খই, মুড়কি, লুচি ও মিষ্টি দিয়ে শীতল ভোগ নিবেদন করা হয়। রাত্রি ১০ টা নাগাদ মা তারাকে স্বর্ণ অলঙ্কার ও ডাকের সাজে রাজ -রাজেশ্বরী বেশে সাজানো হয়। তার পর শুরু হয় নিশি পুজো এবং বিশেষ আরতি। কালীপুজো উপলক্ষে এদিন সারারাত মন্দিরের গর্ভগৃহের দরজা খোলা থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *