বলরাম প্রভুর গোচারণে যাওয়া উপলক্ষে বীরভূমের খয়রাশোলে শুরু হল ৩ দিনের “গোষ্ঠমেলা”

শম্ভুনাথ সেনঃ

পঞ্চপীঠের বীরভূম। এই পুণ্যভূমি বীরভূমে ধর্মাশ্রিত মেলার সংখ্যা অনেক। তবে গোপাষ্টমী উপলক্ষে বীরভূমের বুকে সবচেয়ে বড় মেলা হয় বীরভূমের খয়রাশোলে। এই মেলা অন্ততঃ ৪০০ বছরের পুরোনো। দ্বাপর যুগ থেকে শ্রী শ্রী বলরাম প্রভু শুভ গোপাষ্টমী তিথিতে সখ্যরসে মিলিত হয়ে তাঁর সখাবৃন্দের সহিত গোচরণে যান। সেই বলরাম প্রভুর গোচারণে যাওয়া উপলক্ষে আজও এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বীরভূমের খয়রাশোলে গোষ্ঠডাঙ্গার মাঠে বসে তিন দিনের “গোষ্ঠ মেলা”। খয়রাশোল ব্লকের নাকড়াকোন্দা, হজরতপুর, ভীমগড়, কৃষ্ণপুর, লাউবেড়ে, পারশুণ্ডি, রসা, বড়রা, লোকপুর, পাঁচড়া, কেন্দ্রগড়িয়া, রূপুষপুর এমন সব গ্রামের মানুষজনদের কাছে সবচেয়ে বড় উৎসব। আজ ২০ নভেম্বর বলরাম প্রভুর গোচারণে যাবার শোভাযাত্রায় মিলিত হয় হাজার হাজার নর-নারী, ভক্ত-পুর্ণ্যার্থী। দুপুরে খয়রাশোল গ্রামের শ্রী শ্রী বলরাম প্রভুকে মূল মন্দির থেকে দোলায় চড়িয়ে ১ কিমি দূরে গ্রামের শেষ প্রান্তে গোষ্ঠমঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়। গোচারণের সেই জায়গায় ৫০-৬০ টি কাঁসার থালায় ভোগ নৈবেদ্য নিয়ে শোভাযাত্রায় হাজির হয় বনভোজনে। বিকেলে হয় বনভোজন উৎসব।পরে রাত্রি ৮ টায় পুনরায় বলরাম প্রভুকে মূল মন্দিরে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়।
মেলার কাহিনী: আনুমানিক ষোড়শ খ্রীস্টাব্দে দিল্লিতে লোদী শাসকদের অত্যাচারে উত্তর ভারতের দেববিগ্রহ গুলি ধর্মপ্রাণ সাধকেরা বিভিন্ন মন্দির থেকে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেন। ধ্রুব গোস্বামী নামে জনৈক পরিব্রাজক সন্ন্যাসী শ্যামচাঁদ ও বলরাম বিগ্রহ প্রথমে এ বীরভূমের ইলামবাজারের মঙ্গলডিহীতে নিয়ে আসেন। পরে তা খয়রাশোলের ঠাকুর বংশে বলরাম প্রভুর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে এখানে নির্মিত হয়েছে সুউচ্চ মন্দির। তখন থেকেই চলছে বলরাম প্রভুর নিত্যপূজা, অন্নভোগ, অন্নসত্র। জেলার ধর্মীয় মানচিত্রে বীরভূমের খয়রাশোল এখন অন্যতম বৈষ্ণব তীর্থভূমি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *