বীরভুমের ময়ূরেশ্বর ২ নম্বর ব্লকের “নপাড়া” গ্রামে অগ্রহায়ণে কালীপুজোঃবসেছে গ্রামীণ মেলা

শম্ভুনাথ সেনঃ

বীরভূমের ময়ূরেশ্বর ২ নম্বর ব্লকের উলকুণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতে “নপাড়া” গ্রামের অগ্রহায়ণের এই অমাবস্যায় কালীপূজা বছরের শ্রেষ্ঠ উৎসব। বছর ভর প্রতীক্ষায় থাকেন এলাকার মানুষ। এবারও আজ ১২ ডিসেম্বর (২৫ অগ্রহায়ণ) মহাধুমধামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুই মায়ের কালীপূজা। এখানে প্রতি বছর অগ্ৰহায়ণ মাসের এই অমাবস্যায় দুটি মায়ের পুজো হয়। মা শ্মশানবাসিনী কালী ও ছোটো মা। উলুকুণ্ডা পঞ্চায়েতের এটিই সবচেয়ে বড়ো উৎসব। বহু ভক্ত-পুণ্যার্থীদের সমাগম ঘটে এই মায়ের পুজোয়। পুজো উপলক্ষে বসে ৪ দিনের গ্রামীণ মেলা। মেলা হয়ে ওঠে মহামিলনের ক্ষেত্র। গ্রাম ষোলআনা মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বাউল, কবিগান ও নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ তথ্য জানিয়েছেন গ্রামের এক শিক্ষক সুকুমার গড়াই। সন্নিহিত এলাকার হাজার হাজার মানুষ আসেন এই দুই মায়ের পুজো দেখতে। জনশ্রুতি বড়ো মায়ের পুজো অন্ততঃ চারশো বছরের পুরোনো। সবাই মাকে শ্মশান বাসিনী রূপেই চেনেন। এই পুজো চালিয়ে আসছেন নপাড়া গ্রামের ঘোষ পরিবার। শ্মশান সংলগ্ন খোলা আকাশের নীচেই মায়ের পুজো হয়। নেই কোনো মন্দির। এখানে আজও বলিদান প্রথা চালু আছে। অমাবস্যার রাতে ও পরেরদিন দুপুর পর্যন্ত হয় বলিদান। ঢাক, ঢোল, কাঁসি, বাঁশি ও বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের সাহায্য মায়ের পুজো হয়। এই পুজো এখন সার্বজনীন রূপ পেয়েছে। এই গ্রামেই অপর একটি ছোট মা পূজিতা হন। ৪ দশক আগেই এই পুজো শুরু হয়েছে। যার প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত এক সাধক সুনীল মুখোপাধ্যায়। বর্তমানে এই মুখোপাধ্যায় পরিবার পুজো চালিয়ে আসছেন। এখানে মায়ের কাছে নিবেদিত হয় লক্ষ বেলপাতার আহুতি। মায়ের নিদিষ্ট মন্দিরে মা থাকেন সারাবছর। কার্তিক মাসের অমাবস্যায় মায়ের বিসর্জন হয়। আবার একমাসের মধ্যে মায়ের নতুন মূর্তি নির্মাণ করা হয়। এখানে মায়ের সাথে থাকেন মহাদেব ও মহাকাল। এছাড়াও মায়ের বামে ডানে থাকেন ডাকিনী ও যোগিনী। পুজোর পরদিন দুপুরে হাজার হাজার ভক্ত মায়ের প্রসাদ গ্ৰহণ করেন। অগ্রহায়ণে কালীপুজোকে ঘিরে এলাকার মানুষ এখন উৎসবে মাতোয়ারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *