বীরভূমের “ঘোষগ্রামে” লক্ষ্মীপূজো উপলক্ষে পৌষমাসের প্রতি বৃহস্পতিবার বসে কড়ির মেলা

শম্ভুনাথ সেনঃ

বীরভূমের রামপুরহাট মহকুমার মুর্শিদাবাদ সীমান্তে বীরভূমের ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের ঘোষগ্রামের আরাধ্যা দেবী “মালক্ষ্মী”। এই ঘোষ গ্রাম জেলার বুকে লক্ষ্মীমাতার গ্রাম হিসেবে খ্যাত। এই গ্রামের শ্রেষ্ঠ উৎসব লক্ষ্মীপুজো।


উল্লেখ্য, এখানে লক্ষ্মীমায়ের নিম্বকাষ্ঠে তৈরি দারুমূর্তি। নির্দিষ্ট সময়ে মায়ের মূর্তিতে অঙ্গরাগ করা হয়। তাই এই মূর্তি বিসর্জন করা হয় না। বছরভর অর্থাৎ ৩৬৫ দিন চলে মায়ের নিত্যসেবা। তবে কোজাগরী পূর্ণিমায় মহাধুমধামে অনুষ্ঠিত হয় মালক্ষ্মীর পূজা। তাছাড়া প্রতিবছর পৌষমাসের প্রত্যেক বৃহস্পতিবার মা লক্ষ্মীর বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পুজো ঘিরে গ্রামে বসে পৌষ লক্ষ্মীর কড়ির মেলা। তিল কড়ি, ফুল কড়ি, বুজ কড়ি, দুধ কড়ি ইত্যাদি কড়ি; লক্ষ্মীর ঝাঁপি, পেঁচা এই মেলার মূল আকর্ষণ। দূর-দুরান্তের ভক্তরা মায়ের পুজো দিতে এখানে এসে মায়ের চরণে কড়ি ঝাঁপি ঠেকিয়ে নিয়ে যান নিজের বাড়িতে।


আজ পৌষমাসের ৪ তারিখের বৃহস্পতিবার গ্রামীণ মেলা এবারও বেশ জমজমাট। সন্নিহিত খামেড্ডা, ঝিকরহাটি, আওগ্রাম, বীরচন্দ্রপুর, তুড়িগ্রাম রাঙতড়া, সনকপুর উপলাই গ্রামের মেলা দর্শনার্থীরা নানা বিকি-কিনির মাঝে এই লক্ষ্মীগ্রাম থেকে কিনে নিয়ে যান কড়ি। জনশ্রুতি এই ঘোষগ্রামের লক্ষ্মীপূজা অন্তত হাজার বছরের পুরোনো। বর্তমান দৃষ্টিনন্দন লক্ষ্মীমাতার মন্দিরটি ২০১৮ সালে ভক্তদের দানে প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। তার আগে ১৮১০ খ্রিস্টাব্দে কান্দির রাজা কৃষ্ণচন্দ্র সিংহ ওরফে লালাবাবু এখানে লক্ষ্মীমায়ের মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। জেলার বিশিষ্ট লেখক গবেষক প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এর “তীর্থভূমি তারাপীঠ” গ্রন্থের ৩৩০ পাতায় রয়েছে এমন তথ্যের উল্লেখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *