সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ
ঠিকানা লিখতে গেলে পোস্ট অফিসের কথা আসবেই। কিন্তু চিঠি লেখার কাজে ব্যবহৃত পোস্ট কার্ডের কথা বর্তমান প্রজন্মের কাছে অচল।মুঠোফোনে কথোপকথনে লুপ্ত হয়েছে চিঠির প্রচলন।পুরনো সেইসমস্ত দিনগুলোতে চিঠির আদানপ্রদান, খবরখবর, শুভেচ্ছা বার্তা সহ যে ভাবে প্রচলিত ছিল সেই ভাবনা কে তথা বর্তমান প্রজন্মের কাছে পোস্ট অফিস, পোস্ট কার্ডের ব্যবহার, চিঠি লেখার ভাব ভাষা ইত্যাদি চিত্র ফুটিয়ে তোলার লক্ষ্যে কচিকাঁচাদের নিয়ে অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেন খয়রাসোল ব্লকের লাউবেড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জানা যায় যে, বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের দিয়ে বীরভূম জেলাশাসক, জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান, খয়রাশোল সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক, অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক খয়রাশোল সাউথ, পাঁচড়া প্রোপার, ও সি খয়রাশোল থানা সহ স্থানীয় ব্লক পর্যায়ের অন্যান্য আধিকারিকদের নাম, পদ ও অফিস ঠিকানায় চিঠি লিখে পোস্ট কার্ডের উপর।
পড়ুয়াদের লেখায় ফুটে উঠেছে- আমরা বীরভূম জেলার খয়রাশোল “লাউবেড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় “এর ছাত্র ছাত্রীবৃন্দ। আমাদের চিঠি লেখার উদ্দেশ্য এই যে, বর্তমান সময়ে চিঠি লেখা হারিয়ে যাচ্ছে, তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লবের মোহ জালে। আমাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে যে প্রযুক্তি, তাকে সময়ের দাবি মেনে বরণ করে নিয়েছি আমরা। কিন্তু চিঠি লেখা হারিয়ে গেলে তার সঙ্গে হারাবে একটা যুগ, একটা সংস্কৃতি। তাই আজ হাতে লেখা চিঠির অস্তিত্বের লড়াই শুরু হয়েছে। মন মজেছে মুঠোফোনের চক্করে। আগামীদিনে হয়তো পোস্টকার্ডের দেখা পেতে ডাকঘরে নয়, জাদুঘরে যেতে হবে। আর এই হাতে লেখা চিঠির মাধুর্য যাতে শেষ হয়ে না যায় তার একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র আমাদের বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে। এই সাথে আপনাকে ও আপনার দপ্তরের সকল কর্মীকে জানাই ইংরেজি নববর্ষ(2024) এর শুভেচ্ছা, শুভকামনা ও প্রনাম। আশা রাখি আগামী বছরের মতো আগত নববর্ষে একই ধারা বজায় থাকবে। আপনারা ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন। চিঠি লেখার পর প্রতিকীভাবে কয়েকজন পড়ুয়া চিঠি গুলি নিয়ে খয়রাসোল পোস্ট অফিসের ডাকবক্সে ফেলে আসে। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার প্রতি উৎসাহ প্রদানের জন্য ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেনী থেকে চতুর্থ শ্রেনী পর্যন্ত যে সমস্ত পড়ুয়া ১ম ২য়,ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে তাদেরকে ট্রফি ও বই দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়।এছাড়াও উক্ত বিদ্যালয়ে পাঠরত সমস্ত পড়ুয়াদের কে সান্ত্বনা হিসেবে কলম দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। উল্লেখ্য দিনটিকে আরও স্মরণীয় ও আনন্দময় করার লক্ষ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা সহ ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে বনভোজনের মাধ্যমে ও ডাক মারফত শুভেচ্ছা বার্তাগুলি পাঠিয়ে দিনটি পালন করেন।বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তারক আঢ্য ও সহকারী শিক্ষক অনিক চ্যাটার্জী কচিকাঁচাদের নিয়ে এরূপ অভিনবত্ব উদ্যোগের জন্য এলাকাবাসী সাধুবাদ জানান। এদিন পুরস্কার বিতরণী সভায় অভিভাবকদের উপস্থিতি ও উৎসাহ উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো।