শম্ভুনাথ সেনঃ
বীরভূমের নয়াপ্রজন্ম পত্রিকার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক নয়াপ্রজন্ম পরিবারের একান্ত প্রিয় আপনজন অভিভাবক সন্তোষ সরকার চলে গেলেন পরলোকে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। তিনি রেখে গেলেন তাঁর স্ত্রী কণিকা ও দুই পুত্র অমিত ও অতীশ, বড় পুত্রবধূ তৃপ্তি ও একমাত্র নাতি অনিকেত সরকারকে। পারিবারিক সূত্রে খবর তিনি বেশ কিছুদিন গলব্লাডার সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ৭ জানুয়ারি কলকাতার সল্টলেকে বিএসএফ সেন্ট্রাল হসপিটালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা এবং টেস্ট করার পর গলব্লাডারে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এখান থেকেই ১৩ জানুয়ারি কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৬ জানুয়ারি ভোর ৩.৩৫ নাগাদ তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরদিন দুপুরে মৃতদেহ অ্যাম্বুলেন্সে করে কলকাতা থেকে সিউড়ী কেন্দুয়া নিজ বাসভবনে নিয়ে আসা হয়। শেষ শ্রদ্ধা জানান আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের আপনজনেরা। সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডে তাঁর প্রতিষ্ঠিত ৪০ বছরের সেই পত্রিকালয়ে’র সামনে মৃতদেহ শায়িত রাখা হয়। পরে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় ‘বক্রেশ্বর মহাশশ্মানে’। উল্লেখ্য, নয়াপ্রজন্ম পত্রিকার সূচনালগ্ন থেকেই সন্তোষ সরকার ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। সংবাদ আদান প্রদানের একটি স্থায়ী ঠিকানা ছিল সিউড়ী বাসষ্ট্যান্ড “পত্রিকালয়”। পরে সংগৃহীত সাংবাদিকদের দেওয়া সংবাদ তিনি পৌঁছে দিতেন টিকাপাড়ায় অবস্থিত নয়াপ্রজন্মের সদর দপ্তরে। সিউড়ী বাসস্ট্যান্ডে সন্তোষ সরকারের “পত্রিকালয়” ছিল সম্পাদক, সাংবাদিকদের “কফি হাউস”। তিনি ছিলেন নয়াপ্রজন্মের প্রধান পৃষ্ঠপোষক, অভিভাবক, আত্মজন। পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন কঠোর সমালোচক। পত্রিকার কোনো ভুল-ত্রুটি নির্দ্ধিধায় আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতেন ভাতৃপ্রতিম সম্পাদক কাঞ্চন সরকারকে। উল্লেখ্য, নয়াপ্রজন্ম দপ্তর ও সবুজের অভিযানে আয়োজিত যে কোনো অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থিতি ছিল অনিবার্য। শুধুমাত্র পরামর্শ নয় বাড়িয়ে দিতেন আর্থিক সহযোগিতার হাত। তাঁর মৃত্যুতে আত্মীয় পরিজনদের সাথে নয়াপ্রজন্ম পরিবারের সাংবাদিক মহলে নেমে আসে গভীর শোকের ছায়া। গোটা নয়াপ্রজন্ম পরিবার তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে। প্রসঙ্গত, নয়াপ্রজন্ম পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক প্রয়াত কাঞ্চন সরকার ও পত্রিকালয়ে’র কর্ণধার সন্তোষ সরকারের সম্পর্ক ছিল সহোদরের মতো নিবিড়। নয়াপ্রজন্ম সম্পাদক কাঞ্চন সরকারের প্রয়াণের ঠিক দু’বছরের মাথায় চলে গেলেন নয়াপ্রজন্মের এই অভিভাবক সন্তোষ সরকার, যা নয়াপ্রজন্মের এক অপূরণীয় ক্ষতি!