সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ
বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের গঙ্গারামচক মৌজার মধ্যে খোলা মুখ কয়লা খনি রয়েছে। যেখানে কয়লা উত্তোলনের দায়িত্বে পিডিসিএল নামক সংস্থা। উত্তোলিত কয়লা ট্রান্সপোর্ট করা হয় লোকপুর থানা এলাকার ক্যানেল পাড়ের রাস্তার পাশে ভাদুলিয়া, নওপাড়া গ্রামের ধার দিয়ে। সেই পথের মধ্যে নওপাড়া গ্রামে অবস্থিত মহম্মদিয়া মাদ্রাসা, মসজিদ, ইদগাহ ও পুকুরের পাশ দিয়ে কয়লা পরিবহন করা হয়। কয়লা পরিবহনের সময় মাত্রাতিরিক্ত কয়লার গুঁড়ো ছড়িয়ে পড়া সহ ডাম্পারগুলির উচ্চস্বরে হর্নের জেরে শব্দদূষন সেইসাথে পড়াশোনার ও বিঘ্ন ঘটে। এলাকাজুড়ে কালো আবিরের আচ্ছাদন। সেখানে সবুজ গাছগাছালি থেকে জমির ফসল এমনকি ব্যবহৃত পুকুরের জল সহ সর্বক্ষেত্রে কয়লার গুড়োয় পরিপূর্ণ। এহেন পরিস্থিতিতে মাদ্রাসার শিক্ষকেরা যেমন বিরক্তি হয়ে কাজ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন পাশাপাশি পরিবেশ দূষিতর কারনে মাদ্রাসার পড়ুয়াদের মধ্যে ও দেখা দিয়েছে আবাসিক ভাবে থাকায় অনীহা। এখানে পড়ুয়াদের সংখ্যা প্রায় শতাধিক। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সহ গ্রামবাসীদের বক্তব্য যে, গত ডিসেম্বর মাসে কয়লা উত্তোলনের দায়িত্বে থাকা আধিকারিককে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর আশ্বাস দেন যে, সরজমিনে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহনের। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো সুরাহা না হওয়ায় এদিন মঙ্গলবার ফের নওপাড়া গ্রামের সর্বস্তরের মানুষজন দলবদ্ধ ভাবে গনসাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি জমা দিলেন। তাদের মূলত দাবি কয়লা পরিবহনের জন্য বিকল্প রাস্তা নচেৎ মাদ্রাসাটিকে অন্যত্র নির্মান করে দেওয়া। সেই সাথে মসজিদ, মাদ্রাসা, ইদগাহটিকে গ্রীন করিডোরের ব্যবস্থা। পুকুরের জলের ওপর কয়লার আস্তরণ যেন না পড়ে তার ব্যবস্থা। ভাদুলিয়া চন্ডীতলা থেকে তারাপুর পর্যন্ত উচ্চস্বরে ডাম্পারের হর্ণ না বাজানো। বিশুদ্ধ পানীয় জল ও শৌচালয়ের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি দাবিসমূহ নিয়ে ডেপুটেশন জমা দেওয়া হলো। এলাকাবাসীর আরো অভিযোগ যে, দীর্ঘদিন ধরে সি এস আর ফান্ডের মাধ্যমে এলাকায় যে উন্নয়ন করার কথা তা আজও রহস্যজনকভাবে বন্ধ। গ্রামবাসীদের হুঁশিয়ারি যে সমস্যার সমাধান না হলে আইনিভাবে হাঁটবো, এক্ষেত্রে জনস্বার্থ মামলা থেকে শুরু করে উচ্চ আদালত পর্যন্ত যাওয়া হবে। কয়লা উত্তোলনকারী সংস্থার এক আধিকারিক জানান স্মারকলিপি পেয়েছি, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানাবো। ডেপুটেশন প্রদানে উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসা ও গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে সেখ সামাদ, সাইফুল হক, সেখ জাকির সহ স্থানীয় মসজিদের ইমাম, মাদ্রাসার শিক্ষক সহ পড়ুয়া ও গ্রামবাসীগন।