দীপককুমার দাসঃ
মৃত্যুর ১৮দিন পর নিজের শহর সিউড়ির অদূরে সতীঘাটা মহাশ্মশানে পঞ্চভূতে বিলীন হলো আমেরিকার নিহত নৃত্য শিল্পী অমরনাথ ঘোষ। অনুরাগীরা চোখের জলে শেষ বিদায় জানালেন তাদের প্রিয় শিল্পীকে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আততায়ীর গুলিতে আমেরিকার সেন্ট লুইস মিসৌরির রাস্তায় মৃত্যু হয় আন্তর্জাতিক ধ্রুপদী নৃত্য শিল্পী অমরনাথ ঘোষের। অবশেষে মৃত্যুর ১৮দিন পরে আজ ১৬ মার্চ, শনিবার ভোরে সিউড়িতে এসে পৌঁছায় অমরনাথ ঘোষের নিজের বাড়িতে। দমদম বিমানবন্দর থেকে মৃতদেহ নিয়ে আসে সিউড়ি পৌরসভার শববাহী গাড়িতে করে সিউড়ির রবীন্দ্র সদনে। সেখানে অমরনাথ ঘোষের অনুরাগীরা তাঁর মরদেহে মালা দিয়ে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে শেষ শ্রদ্ধা জানান। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থার সদস্যদের পাশাপাশি বহু মানুষ ভিড় করেন অমরনাথ ঘোষের দেহ শেষ বারের মত দেখতে। সকাল নয়টা পর্যন্ত সিউড়ি রবীন্দ্র সদনে অমরনাথ ঘোষের দেহ রাখা হয়। এরপর ফুলে ঢাকা কফিন বন্দী দেহ সিউড়ি রবীন্দ্র পল্লী দুর্গা মন্দিরে আনা হয়। সেখানেও বহু মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানান। এরপর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় অমরনাথ ঘোষের নিজের রবীন্দ্র পল্লীর বাড়িতে। এরপর কাকার বাড়ি হয়ে সতীঘাটা মহাশ্মশানে। সেখানেই শেষ কৃত্য সম্পন্ন হয়। অমরনাথের জীবন দীপ এভাবে নিভে যাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন অনেকেই। নৃত্য শিল্পী সায়রী দে বলেন, আমাদের ছোট থেকেই ইনসপিরেশন ছিল অমরনাথ। কত পরিশ্রম করে এই জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল। আমরা একটা ভালো প্রতিভা, ভালো ভবিষ্যতকে হারালাম। নব ঊষা নৃত্যম কলাকেন্দ্রের প্রশিক্ষিকা দেবযানী দত্ত ঘোষ বলেন, অমরনাথ দা শুধু একজন নৃত্য শিল্পীই ছিলেন না, ভালো মনের সহজ সরল মানুষ ছিলেন। এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না অমরনাথ দা নেই। নৃত্য শিল্পী অলোক ঘোষ দস্তিদার বলেন, কালকেই খবর পেয়েছিলাম অমরনাথের দেহ সিউড়ি আসছে। শেষ দেখা দেখতে আজ এসেছি এখানে। আমরা সুবিচারের আশায় ৭ মার্চ মোমবাতি মিছিলও করেছি। অমরনাথের চলে যাওয়ার ব্যাপারটা এখনো অজানাই রয়ে গেল। ঘোষের কাকার মেয়ে শুভশ্রী ঘোষ বলেন, মৃত্যুর খবর পেয়ে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে এখান থেকে যোগাযোগ করা হয়। ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে টিন এইড নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে অমরনাথের দেহ সিউড়ি আনা হয়। এখানেরও অনেকেই দেহ আনার ব্যাপারে সাহায্য করেছেন।