বীরভূমের স্বনামধন্য ডাক্তার কালিগতি ব্যানার্জি বেঁচে আছেন তার সৃষ্টিকর্মে

শম্ভুনাথ সেনঃ

জন্মশতবর্ষ পেরিয়ে গেছে কবেই। বীরভূম জেলার ময়ূরেশ্বর থানার উলকুণ্ডা গ্ৰাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত নপাড়া গ্ৰামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মেছিলেন কালীগতি বন্দ্যোপাধ্যায়। তৎকালীন সময়ে বীরভূম জেলার এক স্বনামধন্য ও স্বর্ণপদক প্রাপ্ত চিকিৎসক। তাঁর জন্ম ২৬ শে ডিসেম্বর, ১৯০১। সদর সিউড়ি চন্দ্রগতি মোস্তফা ও সিউড়ি জেলা স্কুল থেকে পড়াশোনা। তারপর চিকিৎসা বিদ্যার জন্য ১৯২১ সালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে স্বর্ণপদক নিয়ে ডাক্তারী পাস করেন। বীরভূমের মানুষজনদের জন্য চিকিৎসা সেইসঙ্গে বিনামূল্যে ঔষধ দিতেন গরীবদের। পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের খুবই স্নেহভাজন ছিলেন তিনি। তাঁর সাথে সম্পর্ক ছিল বড় মধুর।

সারা বীরভূম জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর স্মৃতি। নারী শিক্ষার প্রসারে বীরভূম জেলায় তাঁর প্রচেষ্টায় তাঁর জন্মভূমি “নপাড়া” গ্ৰামে নির্মিত হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়, নপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, গ্ৰন্থাগার, হাসপাতাল, পাকা সড়ক, সেচের জন্য ক্যানেল এমন নানান জনহিতকর কর্ম। নপাড়া গ্ৰামের খেটে খাওয়া গরীব মানুষজনদের নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন রাইবেশে দল। মৃত্যুর পরেও একটি মানুষ বেঁচে থাকে তার সৃষ্টিকর্মে। এছাড়াও সদর শহর সিউড়ির বুকে মহিলাদের জন্য ওনার সম্পর্কে ভাই ডাঃ জ্যোতিরিন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর স্মৃতিতে প্রতিষ্ঠা করেন “কালিগতি স্মৃতি নারী শিক্ষা নিকেতন” উচ্চ বিদ্যালয়। যুগ যুগ ধরে তাঁকে মনে রাখবেন জেলাবাসী। কিন্তু সেই মহান মানুষটির শুধু ছবি আছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। স্থানীয় মানুষজনদের আন্তরিক ইচ্ছে এই মহান, গুণী মানুষটির একটি মর্মর আবক্ষ মূর্তি নির্মিত হোক গনুটিয়া নপাড়া ডাঃ কালীগতি ব্যানার্জী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। বর্তমান প্রজন্মের কাছে তাঁকে তুলে ধরার জন্য বিদ্যালয়ের প্রবেশপথে এই মর্মরমূর্তি স্থাপন একান্ত জরুরী। তিনি যে বীরভূমের বিদ্যাসাগর। এই মহান মানুষটির প্রয়াণ ঘটে ১১ জানুয়ারি, ১৯৭০। তাঁর আবক্ষ মূর্তি নির্মাণের অপেক্ষায় দিন গুনছেন গ্রামের সকল স্তরের মানুষজন। এমন গুণী ব্যক্তিত্বকে আমরা যেন কোনোদিন ভুলে না যায়!

ছবি ও তথ্য: শিক্ষক সুকুমার গঁড়াই, নপাড়া; বীরভূম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *