বাংলা জুড়ে জামাইষষ্ঠী পার্বণ: বীরভূমের গ্রামে গ্রামে ষষ্ঠীতলায় মা-মেয়েদের ভিড়

শম্ভুনাথ সেনঃ

আজ ১২ জুন। সারা বাংলা জুড়ে জামাইষষ্ঠী পার্বণ। প.ব. সরকার এদিন দুপুর ২ টো থেকে অর্ধ দিবস ছুটি ঘোষণা করেছে। বীরভূমের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতেও সকাল থেকেই ষষ্ঠীতলায় মা-মেয়েদের ভিড়। বাংলা জৈষ্ঠ্য মাসের এই শুক্লা ষষ্ঠীর দিনটিকে বেছে নেওয়া হয় জামাইষষ্ঠী হিসেবে। জামাই আদরের জন্য জ্যৈষ্ঠ্য মাসই আদর্শ বলে মনে করা হয়। এদিন উপবাসী মা ও মেয়েরা বাঁশপাতা, হলুদে রাঙানো সুতো, ফুল, নানা রকম ফল, নানা নৈবেদ্য উপাচার দিয়ে পূজার ডালি সাজিয়ে সকাল থেকেই ষষ্ঠী তলায় ভিড় জমিয়েছেন। বীরভূমের অন্যতম সতীপীঠ দুবরাজপুর ব্লকের বক্রেশ্বরে মূল শিবমন্দির সংলগ্ন অক্ষয় বটতলায় পুজোর নৈবেদ্য নিয়ে সকাল থেকেই হাজির মা-মেয়েরা। এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম থেকে এদিন ষষ্ঠী তলায় পুজো দিতে আসেন স্থানীয় মানুষ জন। পুরোহিত মন্ত্র উচ্চারণের মধ্যে দিয়ে আজ ষষ্ঠী পূজার সমর্পণ করে তুলে দেন মঙ্গলসূত, পুষ্প ও প্রসাদ। জেলার পণ্ডিতপুর, চিনপাই, মল্লারপুর, কোটাসুর, দক্ষিণগ্রাম এমন বহু গ্রাম থেকে জামাইষষ্ঠীতে গ্রামের ষষ্ঠী তলায় মা-মেয়েরা ভিড় জমিয়েছেন তেমন খবর পাওয়া গেছে। আসলে বাংলায় বারো মাসে তেরো পার্বণের অন্যতম এই জামাইষষ্ঠী পার্বণ। মেয়ে-জামাইয়ের দাম্পত্য জীবনের সুখ-শান্তি, মঙ্গল কামনা এ এক লৌকিক আচার-অনুষ্ঠান। শাশুড়ি মায়েরা জামাইকে ষষ্ঠীর ফোঁটা ও হলুদ মাখানো সুতো হাতে বেঁধে সুখে শান্তিতে থাকার আশীর্বাদ করেন। আপ্যায়নের খাদ্যতালিকায় থাকে নানা ব্যঞ্জন। তবে ইদানিং জামাই বাবাজীবনদের শ্বশুরালয়ে উপস্থিতির হার অনেকটা কম। তবুও ধর্মীয় টানে এই প্রাচীন লোকাচার আজও ধরে রেখেছে গ্রামীণ লোকায়ত সংহতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *