বীরভূমের সূচপুর গণহত্যার ২৪ বছর: শহীদ তর্পণ অনুষ্ঠান নানুরের বাসাপাড়ায়

শম্ভুনাথ সেনঃ

আজ ২৭ জুলাই বীরভূমের নানুর ব্লকের সূচপুরে সেই গণহত্যার কালো দিন। এবারও শহীদদের স্মরণে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বাসাপাড়ায় শহীদ তর্পণ অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক, বিধানসভার উপাধ্যক্ষ ড. আশিস ব্যানার্জি, বোলপুর সাংসদ অসিত মাল, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, জেলা সভাধিপতি তথা অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক ফায়জুল হক ওরফে কাজল সেখ ছাড়াও অন্যান্য বিধায়ক সহ তৃণমূলের নেতৃত্ব ও কর্মী সমর্থক মিলে হাজার হাজার মানুষ। প্রতিবছর তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই শহীদ স্মরণ অনুষ্ঠিত হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। নিহত সেখ নিজাম, রসুল বক্স, সবুর সেখ, সেখ সালামত, হারাই সেখ, সরান মেটে, সফিকুল সেখ, সেখ সফিক, আসরফ আলী, সেখ রাজা, সেখ আলী হোসেন এই ১১ জন শহীদের শহীদ বেদীতে মাল্যদান, কোরান পাঠ ও শহীদ তর্পণ অনুষ্ঠিত হয়। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে সকাল থেকেই নানুরের বাসাপাড়ায় তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। সারা জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জড়ো হয় কর্মী-সমর্থকরা। শহীদ স্মরণ অনুষ্ঠানে এদিন বক্তারা শহীদ পরিবারবর্গকে যেমন সমবেদনা জানান, তেমনি তুলে ধরেন সেদিনের ইতিহাস।

উল্লেখ্য, নানুরের থুপসাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নানুর ব্লকের বাসাপাড়া সংলগ্ন নওয়ানগর–কড্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত এই সূচপুর গ্রাম। ২০০০ সালের ২৭ জুলাই সকালে সূচপুর গ্রাম এলাকায় জমি চাষের বিবাদকে কেন্দ্র করে রাজ্যের তৎকালীন শাসক সিপিএমের জল্লাদ বাহিনী ১১ জন ক্ষেত মজুরকে খুন করে বলে অভিযোগ ওঠে। তারা বাম শরিক আরএসপি দল ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন বলে দলের পক্ষে জানানো হয়। দলবদল করে আসার কারণে এই ১১ জন ক্ষেত মজুরকে সূচপুর গ্রামে তুলে নিয়ে গিয়ে একটি ঘরের মধ্যে পিটিয়ে পিটিয়ে, বর্শা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। তারপর পৈশাচিক উল্লাসে মাতে হার্মাদ বাহিনী। হাড়হিম করা সিপিএম-এর সেই পৈশাচিক হত্যালীলা নাড়িয়ে দিয়েছিল সারা বাংলাকে। সিপিএম এর এই পৈশাচিক হত্যালীলা যখন ঘটে, তখন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী। উল্লেখ্য, সূচপুর গণহত্যা মামলায় সিপিএম-এর যে ৪৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে শারীরিক কারণে মুক্তি দেওয়া হয়। বেশ কয়েকজন কারাবাস কালে মারা যান। বাকিরা এখনও রয়েছেন কারাগারেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *