বীরভূমে “শিক্ষারত্ন-২০২৪” পুরস্কার পাচ্ছেন লাভপুরের মজুমদারডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাঞ্চন বন্দ্যোপাধ্যায়

শম্ভুনাথ সেনঃ

বীরভূম থেকে মাত্র একজন শিক্ষক পাচ্ছেন এবার শিক্ষারত্ন পুরস্কার। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসে প.ব. রাজ্য সরকারের শিক্ষারত্ন-২০২৪ পুরস্কার তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হবে৷ জেলার গর্ব, জনপ্রিয় এই বিশিষ্ট শিক্ষক কাঞ্চন বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বীরভূমের লাভপুর চক্রের “মজুমদারডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক৷ বাড়ি লাভপুর ব্লকের চৌহাট্টা গ্রামে৷ ১৯৯৯ সালের পয়লা জুন তিনি প্রথম লাভপুর চক্রের শাষপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকরূপে যোগদান করেন৷ মজুমদারডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন ২০০৭ সালে। ২০১৩ সাল থেকে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের দায়িত্ব সামলেছেন৷ বর্তমানে তিনি এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক৷ গত ২৮ আগস্ট রাজ্য সরকারের স্কুল দপ্তর একটি মেল মারফত তাকে শিক্ষারত্ন সম্মানে ভূষিত হওয়ার সংবাদটি জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, আবেদনের ভিত্তিতে গত ২৬ জুলাই, ২০২৪ কলকাতার বিকাশ ভবন থেকে অনলাইনে তাঁর কাছ থেকে ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। এই শিক্ষারত্ন সম্মান সদ্য প্রয়াত তাঁর বাবা গৌরীশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়’কে তিনি উৎসর্গ করতে চান বলে কাঞ্চনবাবু জানান। সেই সঙ্গে পুরস্কারের অর্থমূল্য তিনি এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কাজে ব্যয় করবেন বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি তাঁর শিক্ষাদান কার্য শিশু মনকে আকর্ষণীয় করতে প্রথম থেকেই নানা উদ্যোগ নিয়েছেন।

উল্লেখ্য, এই বিদ্যালয়টি আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় অবস্থিত ৷ আগে স্কুল ছুটের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি৷ তিনি এই বিদ্যালয়ে যোগদান করার পর থেকেই স্কুলছুটের সংখ্যা ক্রমশ কমেছে৷ পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের বুঝিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলমুখী করার তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন প্রথম থেকেই৷ অভিভাবকদের মতামত, পরামর্শ দেওয়ার জন্য স্কুলে রেখেছেন “আইডিয়া বক্স”। বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নেও রয়েছে তাঁর বিশেষ অবদান৷ শিক্ষার পাশাপাশি শরীরচর্চা, খেলাধূলা, বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ইন্টারনেটের ব্যবহার, গ্রীষ্মে ওয়াটার বেল এর প্রচলন এমন তাঁর বিভিন্ন উদ্যোগ প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়াদের কাছে এনে দিয়েছে আলাদা উৎসাহ।


“শিক্ষক” মানুষ গড়ার কারিগর আর “বিদ্যালয়” মানুষ গড়ার কারখানা। ২৬ বছর ধরে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন এই কাঞ্চনবাবু। আগামী আরও দশ বছর তাঁর শিক্ষকতা জীবনে শুধু শিক্ষার্থীকেই নয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেও তিনি মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে চান। পড়ুয়া ও বিদ্যালয়ের উন্নয়নে তিনি কাটাতে চান আগামী জীবন। উল্লেখ্য, অতীতেও শিক্ষাদান ও সমাজসেবার স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার ও সম্মাননা৷ আর এবার এই ২০২৪ এ জেলার বুকে তিনি একাই পাচ্ছেন এই শিক্ষারত্ন সম্মান। এমন সুসংবাদে শুধুমাত্র শিক্ষক মহলে নয়, জেলা জুড়ে বইছে খুশির হাওয়া৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *