শিকলে বেঁধে শ্মশানকালীর বিসর্জন দুবরাজপুরে

উত্তম মণ্ডলঃ

প্রচলিত প্রথা মেনে দুর্গাপুজোর দশমীর পর একাদশীর দিন দুবরাজপুরে বিসর্জন হলো শতাব্দী প্রাচীন শ্মশানকালীর। এই বিসর্জন দেখতে দুবরাজপুর শহর ছাড়াও আশেপাশের গ্ৰাম থেকে ভিড় করেন প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। কথিত আছে, বহুদিন ধরেই দাসপাড়ার মানুষই এই বিসর্জন করে আসছেন। বলা হয়, মা নাকি বেদি ছেড়ে বেরোতে চান না। আর তাই একসময় ঝাঁটা দেখিয়ে, গালিগালাজ করে মন্দির থেকে মাকে বের করা হতো। কিন্তু বর্তমানে সভ্যসমাজে এই রীতি উঠে গেছে। তবে এখনো মাকে শিকল ও দড়ি বেঁধে বেদি থেকে নামানো হয় এবং বিসর্জন করা হয় পাশের রুজের পুকুরে। পরম্পরা অনুযায়ী দাসপাড়ার লোকেই বিসর্জন করেন। এই বিসর্জনকে ঘিরে দাস পরিবারের বাড়িতে এদিন আত্মীয়-স্বজন আসেন।
মায়ের মূর্তি গড়া থেকে শুরু করে সারাবছর পুজো ও দেখাশোনার দায়িত্ব থাকে বৈষ্ণবদের হাতে আর বিসর্জন হয় দাস পরিবারের হাত ধরে। এই পরম্পরা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। বিশালাকার মায়ের মূর্তি শ্মশান কালী মন্দিরের পিছনে থাকা রুজের পুকুরে বিসর্জন করা হয়। দাস পরিবারের সদস্য গুরুপদ দাস জানান, এক সময় মাকে বেদি থেকে নামাতে গালিগালাজ করা হতো এবং ঝাঁটাও দেখানো হতো কিন্তু বর্তমান সভ্য সমাজে তা এখন আর হয় না। তবে এখনও মাকে শিকল ও দড়ি বেঁধে বেদি থেকে নামানো হয়। এই বিসর্জনকে কেন্দ্র করে দাসপাড়ার প্রত্যেকের বাড়িতেই আত্মীয়স্বজন আসেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে দুবরাজপুর থানা থেকে মোতায়েন করা হয় প্রচুর পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *