বাংলার ঘরে ঘরে আলপনা দিয়েই লক্ষ্মীবরণ

দীপককুমার দাসঃ

আজ কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো। আর এই লক্ষ্মীপুজোয় মেঝেতে খড়িমাটি বা চালের গুঁড়ার শ্বেতশুভ্র আলপনার চল অতি প্রাচীন কাল থেকেই। মা লক্ষ্মী হলেন ধন সম্পদ ও প্রাচুর্যের দেবী। আর এই দেবীকে আবাহন জানানো হয় আলপনার মাধ্যমে। এই আলপনা হল একটি বাংলার লোকশিল্প শৈলী। আলপনা বা আলিম্পন হল লেপন করা কারুকার্য। অন্যান্য মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে যে আলপনা আঁকা হয়, লক্ষ্মীপুজোর আলপনার রীতি তার থেকে কিছুটা আলাদা। লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা, লক্ষ্মী শস্যের দেবী। তাই লক্ষ্মীর আলপনাতে থাকে পেঁচা, ধানের শিষ, লক্ষ্মীর পদচিহ্ন, পদ্মফুল। এই রেখাচিত্রের মাধ্যমে অন্যান্য বারের মতো এবারে ও লক্ষ্মীকে আবাহন জানানো হলো।ময়ূরেশ্বরের ন-পাড়া গ্রামের রায় চৌধুরী বাড়ির গৃহবধূ শ্রীপর্ণা রায় চৌধুরী জানান, প্রত্যেক বছরের মতো এবারও লক্ষ্মী দেবীর আরাধনায় ব্রতী হয়েছি। প্রতি বছরের মতো এবারও আলপনা এঁকেছি। আর আলপনা ছাড়া লক্ষ্মীপুজো ভাবাই যায় না। আর আমাদের রায় চৌধুরী বাড়ির মন্দিরেও সাড়ম্বরে পালিত হয় লক্ষ্মীপুজো। সাঁইথিয়া রক্ষাকালী তলার গৃহবধূ তথা সিউড়ি সুভাষ পল্লীর বাসিন্দা স্কুল শিক্ষিকা শিউলি মন্ডল জানান, ছোট থেকেই ছবি আঁকা ও আলপনা আঁকা আমার শখ। তবে লক্ষ্মী পুজোর আলপনার মধ্যে আলাদা একটা বৈশিষ্ট্য আছে। লক্ষ্মীর আলপনাতে প্রাধান্য পায় পেঁচা, ধানের শিষ, লক্ষ্মীর পদচিহ্ন, পদ্মফুল। খড়ি বা রঙ দিয়ে মেঝের উপর তুলি দিয়ে এবার ও এঁকেছি আলপনা। আর আলপনা আঁকতে আঁকতেই গুনগুন করে গেয়েছি–এসো মা লক্ষ্মী, বসো ঘরে….।সিউড়ি ডাঙালপাড়ার যুবতী দেবিকা দত্ত বলেন, ছোট থেকেই আঁকা আঁকির শখ। আলপনা ও আঁকি। আর লক্ষ্মী পুজোতে আলপনা হবে না, সেটা আবার হয় নাকি? লক্ষ্মীপুজোর সঙ্গে আলপনা অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বাংলার প্রায় প্রতিটি ঘরেই বাংলার এই লোকশিল্প শৈলীর মাধ্যমে আবাহন করা হয় দেবী লক্ষ্মীকে। এবারেও সেই রীতি মেনেই লক্ষ্মীপুজোতে মেতে উঠেছে বাঙালি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *