
শম্ভুনাথ সেনঃ
বীরভূমে বছর ভর অন্তত ২০০টি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। তার মধ্যে ধর্মাশ্রিত মেলার সংখ্যাই বেশি। তবে রাসপূর্ণিমা উপলক্ষে জেলার বুকে সবচেয়ে বড় মেলা অনুষ্ঠিত হয় ইলামবাজার ব্লকের মঙ্গলডিহি গ্রামে। বীরভূমের ধর্মীয় মানচিত্রে মঙ্গলডিহি এক অন্যতম বৈষ্ণব তীর্থভূমি।


জনশ্রুতি এই মেলা অন্ততঃ ৪৫০ বছরের পুরোনো। কার্তিকী পূর্ণিমায় শ্রীকৃষ্ণের রাসযাত্রাকে কেন্দ্র করে শ্যামচাঁদ বলরাম এর বনভোজনে যাওয়া উপলক্ষে বীরভূমের সুবিখ্যাত রাসমেলা ১৫ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। ৪ দিনের এই মেলা হলেও মেলা থাকে ৭ দিন। এই মেলায় প্রায় লক্ষ লোকের সমাগম ঘটে। বিকি কিনির পাশাপাশি মেলার সাংস্কৃতিক মঞ্চে চলে নানা অনুষ্ঠান। ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় মঙ্গলডিহির ছোটো বাড়ির রাধারাণী মদনগোপাল ও বিনোদ রায় এবং বড় বাড়ির শ্যামচাঁদ ও বলরামকে নিয়ে দোলায় চড়িয়ে মূল মন্দির থেকে গ্রামের প্রান্তে মোড়ল পুকুর ও দুলো পুকুর সংলগ্ন বনভোজন তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। বিগ্রহ মূর্তি নিয়ে সারা রাত্রি ব্যপী চলে শোভাযাত্রা।


অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ বাজি পোড়ানো। পুকুরের পাড়ে এই বাজী প্রদর্শনী দেখতে সারা রাত্রি অপেক্ষা করেন হাজার হাজার মানুষ। পরে সেখান থেকে পুনরায় বিগ্রহ মূর্তি নিয়ে আসা হয় মূল মন্দিরে। উল্লেখ্য, মঙ্গলডিহির পর্ণীগোপাল ঠাকুর ছিলেন ষোড়শ শতকের একজন বিখ্যাত বৈষ্ণবসাধক। কথিত ধ্রুব গোস্বামী নামে এক পরিব্রাজক হরিদ্বার থেকে শ্যামচাঁদ বলরামের বিগ্রহ এখানে রেখে যান। সেই থেকেই চলছে নিত্যসেবা এবং এই রাস মেলার সূচনা। বর্তমানে এই ঠাকুর বংশ ছোট বাড়ি ও বড় বাড়ি নামে পরিচিত।
