নবপর্যায়ের বীরভূমির ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান সিউড়িতে

সনাতন সৌঃ

বীরভূম জেলার সুপ্রাচীন একমাত্র ঐতিহ্যবাহী সাহিত্য ও সংস্কৃতির অন্যতম প্রতিষ্ঠান হলো বীরভূম সাহিত্য পরিষদ। তদানীন্তন জেলার সাহিত্য জগতের দিকপালরা ১৩১৭ বঙ্গাব্দে এই সাহিত্য পরিষদ গঠন করেন। এই পরিষদের মুখপত্র হলো ‘বীরভূমি’। রাঢ় বাংলায় সাহিত্য সাহিত্য সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষের কাছে অত্যন্ত পরিচিত নাম ‘বীরভূমি’ সাহিত্য পত্রিকা। পরবর্তী সময়ে নবপর্যায়ে এই সাহিত্য পত্রিকা নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হয়। এই ঐতিহ্যময় কর্মধারাকে অব্যাহত রাখতে বীরভূম সাহিত্য পরিষদ ১১ মে সারাদিন ব্যাপী সিউড়ি বেণীমাধব স্কুলের সামনে নিজস্ব ভবনে শতবার্ষিকী সভামঞ্চে এক মনোরম পরিবেশে সাহিত্য সভার আয়োজন করলো। এই সভায় বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু কবি সাহিত্যিক অংশ গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে উদ্বোধন করলেন সাহিত্য পরিষদের সভাপতি শান্তিময় মুখোপাধ্যায়। বৈদিক মন্ত্র পাঠ করলেন ‘দেশের পথিক’ সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক দীপক মুখোপাধ্যায়।বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা সৈয়দ তানভীর নাসরিন। মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন বীরভূম সাহিত্য পরিষদের সম্পাদক সরোজ কর্মকার,সহ সভাপতি দ্বয় ডঃ বাদল চন্দ্র সাহা ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডঃ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়। এছাড়া সম্মানীয় অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন গীতা পাঠ ভবনের শীর্ষ সেবক স্বামী সত্যানন্দ মহারাজ। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন পরিষদের সহ সম্পাদক বিমল সোম। সাম্প্রতিক জম্মু ও কাশ্মীরে অমরনাথ যাত্রায় এবং ভারত- পাকিস্তানের যুদ্ধতে যেসমস্ত নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।কবিতা পাঠ করেন মুক্তিপদ মন্ডল, মৃন্ময় মজুমদার, মঞ্জু শর্মা,আরজিয়া কাদের, রাজেন্দ্র সাহু, সুকুমার অঙ্কুর, সন্দীপন রায়, ডঃ আদিত্য মুখোপাধ্যায়, প্রদীপ মন্ডল, রূপালী ভট্টাচার্য্য, অলক দাঁ, পরিমল ঠাকুর, উজ্জ্বল ঠাকুর, তামস ওঝা, তাপস কুমার চট্টরাজ, অরিজিৎ হাজরা প্রমুখ। এরপর সাহিত্য পরিষদের মুখপত্র নবপর্যায়ে বীরভূমি সাহিত্য পত্রিকা উন্মোচন করা হলো।সাহিত্য রত্ন হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ের কর্মজীবন প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন প্রাবন্ধিক শ্রীকুমার ভট্টাচার্য। সাহিত্যিক কিশোরী রঞ্জন দাসের জীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন নিতাই প্রসাদ ঘোষ।কবি চন্ডীদাসের পদাবলীর আবিষ্কর্তা নীলরতন মুখোপাধ্যায়ের কর্মজীবন প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন তারাদাস চট্টোপাধ্যায়। সাহিত্য পরিষদের প্রাককথন প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন সরোজ কর্মকার। সাহিত্য পরিষদের প্রারম্ভিক আদি কথা বলেন সাহিত্য পরিষদের আহ্বায়ক ডঃ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়।সাহিত্য বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যালোকের মূল্যবান অজানা কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন পবিত্র দাসবক্সি। কথা সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহিত্য কথা প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন সুনীল পাল।সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী বিনয় হাজরা, নিতাই মাল,অসীমা মুখোপাধ্যায়, মানবী সরকার, প্রভাত শিকদার প্রমুখ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন প্রাক্তন অধ্যাপক নারায়ণ প্রসাদ ভট্টাচার্য্য। অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণকারী সকলকে স্মারক উপহার দিয়ে সম্মানিত করা হয়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবে সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট সংস্কৃতিপ্রেমী তথা কবি সুশান্ত রাহা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে মধ্যাহ্ন ভোজনে আপ্যায়িত করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *