নয়াপ্রজন্ম প্রতিবেদনঃ
সম্প্রতি বিশ্ববিজ্ঞানে একটি বার্তা বারবার আলোচিত হচ্ছে—ভবিষ্যতে পৃথিবীতে একটি বিশাল গ্রহাণুর (Asteroid) আঘাত আসতে পারে। যদিও এটি কোনও কাল্পনিক চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য মনে হতে পারে, কিন্তু বাস্তবেও বিজ্ঞানীরা এই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
কী এই গ্রহাণু?
গ্রহাণু হলো মহাকাশে ঘুরে বেড়ানো পাথরখণ্ড বা ধাতব বস্তু, যেগুলি সাধারণত মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের কক্ষপথের মাঝামাঝি অঞ্চলে অবস্থান করে। তবে কোনো কোনো সময়ে এসব গ্রহাণু কক্ষপথ থেকে সরে এসে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসতে পারে।
নাসার হুঁশিয়ারি
নাসা এবং ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির (ESA) বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর দিকে আসতে থাকা গ্রহাণুগুলোর উপর নজর রাখছেন। ২০২৩ সালে নাসা ঘোষণা করে, একটি গ্রহাণু “2023 DW” আগামী কয়েক দশকের মধ্যে পৃথিবীর দিকে আসতে পারে। তবে তার পৃথিবীতে আঘাত হানার সম্ভাবনা এক শতাংশেরও কম।
গ্রহাণুর আঘাত কতটা বিপজ্জনক?
প্রায় ৬৬ মিলিয়ন বছর আগে এক বিশাল গ্রহাণুর আঘাতে ডাইনোসররা নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। যদি সমান আকৃতির কোনও গ্রহাণু আবার পৃথিবীতে আঘাত হানে, তাহলে সেটা মারাত্মক বৈশ্বিক প্রভাব ফেলতে পারে—বিপুল প্রাণহানি, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য সংকট, এমনকি সভ্যতার অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে।
প্রস্তুতির ব্যবস্থা
বিজ্ঞানীরা শুধু গ্রহাণু পর্যবেক্ষণ করেই থেমে নেই। নাসা ২০২২ সালে “ডার্ট মিশন” (DART Mission) চালিয়ে সফলভাবে একটি গ্রহাণুর গতিপথ পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছে। এটি ছিল মানব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মহাকাশে একটি গ্রহাণুকে সরানোর প্রয়াস, যা আশার আলো দেখাচ্ছে।
জনসচেতনতা ও ভবিষ্যতের করণীয়
এমন ঘটনায় আতঙ্কিত না হয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক সচেতনতা গড়ে তোলা জরুরি। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে মহাকাশ বিষয়ে শিক্ষা বাড়াতে হবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় একটি বৈশ্বিক মহাকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার দিকেও মনোযোগ দিতে হবে।
পৃথিবীতে গ্রহাণুর আঘাত একটি বাস্তবসম্ভব পরিস্থিতি হলেও, তা আসন্ন নয় এবং বিজ্ঞানীরা দিনরাত পরিশ্রম করে এমন সম্ভাবনাকে প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছেন। ভবিষ্যতের নিরাপত্তার জন্য চাই প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, এবং বৈশ্বিক সহযোগিতা।