
মেহের সেখঃ
বীরভূম জেলা প্রশাসন ও বীরভূম জেলা পরিষদের ব্যবস্থাপনায় এবং দুর্গাপুর ধান্যসড়া সিধু-কানু লোকসংস্কৃতি কেন্দ্রের উদ্যোগে বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের ধান্যসড়া গ্রামে ১৬৭ তম হুল দিবস উদযাপিত হল। প্রথমেই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার পরে শহীদ বেদীতে মাল্যদানের মধ্যে দিয়ে মূল মঞ্চে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অতিথি হিসেবে হাজির ছিলেন বীরভূমের জেলা শাসক বিধান রায়, অতিরিক্ত জেলাশাসক কৌশিক সিনহা, মাননীয় মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, বীরভূম জেলা পরিষদের কো-মেন্টর ধীরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি, বীরভূম জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি নন্দেশ্বর মন্ডল, বীরভূম জেলার কৃষি সেচ ও সমবায় স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ মার্ডি প্রমুখ। আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে প্রথমে অতিথিদের ঘটি-জল সহযোগে আদিবাসী নিয়মে বরণ করে নেওয়া হয়। এরপর সম্মানীয় অতিথিদের হাত দিয়ে প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্যে দিয়ে মূল মঞ্চে অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথমেই হুল দিবস এবং সাঁওতালদের বিদ্রোহ নিয়ে বক্তব্য রাখেন মাননীয় জেলা শাসক বিধান রায়। এরপর একে একে সম্মানিত অতিথিরা হুল দিবস নিয়ে তাঁদের বক্তব্য পেশ করেন। বৃহস্পতিবার শুরু হয়ে শনিবার পর্যন্ত তিন দিন ধরে লোকসংস্কৃতির নানা ধরনের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ধান্যসড়া গ্রামে হুল দিবস উদযাপিত হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যাপারে যেমন আদিবাসী মানুষদের সচেতন করা হয়, জমির পাট্টা বিলি করা হয়, মেধা বৃত্তি প্রদান করা হয় তেমনি আদিবাসী সংস্কৃতি জানার জন্য উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে ‘এভেন’ নামের একটি পত্রিকার মোড়ক উন্মোচিত হয়। অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা বুদ্ধদেব হাঁসদা জানান— ধান্যসড়া গ্রামে আনুমানিক ১৪০০ মানুষের বসবাস রয়েছে। আজ থেকে বত্রিশ বছর আগে তাঁর দাদু চুরকো হাঁসদা এই গ্রামে প্রথম হুল দিবস উদযাপন শুরু করেন। পরবর্তীতে তাঁর বাবা মনসা হাঁসদা এবং বর্তমানে সে অর্থাৎ তাদের তিন প্রজন্ম ধরে তারা ধান্যসড়া গ্রামে হুল দিবস উদযাপনের অন্যতম কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছেন।

