শম্ভুনাথ সেনঃ
বিজ্ঞান সাধক আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের আজ ১৬২ তম জন্মদিন। ১৮৬১ খ্রীষ্টাব্দের এমনই এক ২শরা আগষ্টের দিনে এই বাঙালি বিজ্ঞানী জন্মেছিলেন বর্তমান বাংলাদেশের খুলনা জেলার রাডুলি গ্রামে। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞান চেতনার উন্মেষ ঘটাতে বীরভূমের ময়ূরেশ্বর চক্রের “উলকুণ্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে” আজ যথাযথ মর্যাদায় বিজ্ঞানীর জন্মদিন উদযাপিত হয়। এই মানব হিতৈষী বিজ্ঞানীর প্রতিকৃতিতে ফুল আর মালা দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা ও ছাত্র-ছাত্রীরা। বিজ্ঞানীর পড়াশুনা, বিজ্ঞান গবেষণার নানা দিক, কর্মজীবন ও তাঁর আদর্শ ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে তুলে ধরেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুকুমার গড়াই। উল্লেখ্য, উলকুন্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১৮১ জন। তাদের মধ্যে ছাত্রী রয়েছে ৯১ জন! প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান চলে এই বিদ্যালয়ে। শিক্ষক ও শিক্ষিকা রয়েছেন মোট ৫ জন। সুকুমারবাবু জানিয়েছেন প্রায় দু বছর ধরে করোনা অতিমারীর কারণে বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বই পড়ার অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে শিশুরা। তেমন করে দু’বছর ধরে বিদ্যালয়ে কোনো অনুষ্ঠান উদযাপন করা যায়নি। তাই পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে বিজ্ঞানী প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের জন্মদিনটি ঘিরে ছাত্র-ছাত্রীদের আকর্ষণ যোগ্য একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলোচনায় ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে তুলে ধরা হয় এই বাঙালি বিজ্ঞানীর জীবনবেদ। উল্লেখ্য, এই বিজ্ঞানী শুধুমাত্র রসায়নবিদ বা শিক্ষকই ছিলেন না, ছিলেন দার্শনিক ও কবি। ভারতীয় রসায়ন গবেষণা চর্চার তিনি ধারক, বাহক। “বেঙ্গল কেমিক্যালে’র” তিনি প্রতিষ্ঠাতা। ২১ বছর বয়সে বিলেতের স্কটল্যান্ডের “এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়” থেকে রসায়ন শাস্ত্র নিয়ে তিনি অধ্যায়ন করেন। সারাটা জীবন কাটিয়ে দেন বিজ্ঞান সাধনায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন শিক্ষার উন্নতিকল্পে সেই সময় তিনি দু’লক্ষ টাকা দান করেন। প্রফুল্ল চন্দ্র রায় প্রকৃতই ছিলেন একজন বিজ্ঞান সাধক, মানবদরদী ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন চিরকুমার। ১৯৪৪ খ্রীস্টাব্দের ১৬ জুন কলকাতায় বিজ্ঞানী প্রফুল্ল চন্দ্র রায় অনন্ত লোকে যাত্রা করেন। আজ ২ আগষ্ট উৎসাহের সঙ্গে উলকুণ্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা গান, কবিতা, নৃত্য, বিজ্ঞান আলোচনার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করে।