সন্তোষ পালঃ
অবশেষ বহু জল্পনার পর আজ ১১ আগষ্ট কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই গ্রেপ্তার করলো বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। গতকাল রাতেই সিবিআইয়ের আধিকারিকরা বোলপুরের গেস্ট হাউসে আসেন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনী আজ সকাল থেকেই অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িটি ঘিরে রাখে। এরপর সকাল সাড়ে নটা নাগাদ সিবিআইয়ের আধিকারিকরা বোলপুর পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নীচুপটিতে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে যান এবং জিজ্ঞাসা বাদ করেন। যথার্থ উত্তর না পাওয়াই তাকে গ্রেফতার করা হয়। এখান থেকে দুর্গাপুর সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়। সরকারী হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা করার পর পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল আদালতে তোলার কথা। উল্লেখ গরু পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত অনুব্রত মণ্ডলকে সোমবার নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিশ পাঠায় সিবিআই। সেদিন তিনি এসএসকেএম হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা করান। সেখান থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন ভর্তি হওয়ার মত পরিস্থিতি তার নেই। কিন্তু কাকতালীয় ভাবে পরদিনই বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মূর নির্দেশে ডাক্তার চন্দ্রনাথ অধিকারী শারীরিক পরীক্ষা করেন অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে এবং বেডরেস্টের নিদান দেন। যা এসএসকেএম হাসপাতালের রিপোর্ট এর ঠিক উল্টো ।এনিয়ে তীব্র তর্কের দানা বাঁধে। এর পরই তার আইনজীবী ১৪দিনের জন্য সময় চেয়ে বার্তা পাঠান সিবিআইয়ের আধিকারিকদের কাছে কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। ইতিমধ্যেই অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সাইগল হোসেনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দেড়শত কোটি সম্পদের হদিস পায় সিবিআই। সাপ্লিমেন্টারী চার্জশিটে নাম রয়েছে সাইগল হোসেনের। এই সূত্র ধরেই দিন সাতেক আগে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা কেরিম খান ও টুলু মন্ডলের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই ও ইডি।এদিন ১৭ লক্ষ টাকা ও বেশ কিছু মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়। এই মুহূর্তে জেলা তৃণমূল নেতা কর্মীদের মধ্যে কী হয় হয় ভাব। আজ আসানসোল আদালতে জামিন পাবেন নাকি সিবিআই হেফাজত এনিয়ে জেলা ও রাজ্যজুড়ে জোর জল্পনা। তৃণমূল জেলা সভাপতি গ্রেফতার যেন “এতদিনে কী পড়িল ধরা অশনি ভরা বিদ্যুৎ”। এর আগে বার দশেক হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেন আধিকারিকরা কিন্ত মাত্র একবার হাজিরা দেন অনুব্রত মণ্ডল। রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তার ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এখন জেল হাজতে। তারমধ্যে অনুব্রত মণ্ডল গ্রেপ্তার হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে এরপর কার পালা। বলা যায় এই ঘটনায় অনেকটা ব্যাকফুটে তৃণমূল কংগ্রেস।