মহঃ সফিউল আলমঃ
পরম্পরা মেনে প্রতি বছরের মতো এবছরও বীরভূমের প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থান রাজনগরে শুরু হয়েছে বেড়া পরব৷ পুরো ভাদ্রমাস জুড়ে এটি চলবে৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে৷ এলাকার প্রবীণ মানুষদের মতে, সুদূর অতীতে রাজনগরের পাঠান রাজ বংশের রাজারা এটির সূচনা করেন৷ তার পর থেকে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই বেড়া পরব নিয়মিত হয়ে আসছে৷ এলাকার বিভিন্ন মুসলিম অধ্যুষিত সংখ্যা লঘু পরিবারগুলিতে এটি পালন করা হয়ে থাকে৷ স্থানীয় মালাকার পদবির শিল্পীদের হাতের তৈরি বেড়া কিনে নিয়ে যান বাসিন্দারা৷ বাঁশ বা নারকল কাঠি, থার্মোকোল, শোলা, রঙীন কাগজ প্রভৃতির সাহায্যে পিরামিড আকারে কাঠামো তৈরি করা হয়৷ পরব পালনকারীরা বলেন, সেগুলিতে সিন্নি, চিরাগ তথা প্রদীপ, মোমবাতি প্রভৃতি রেখে নিকটবর্তী পুকুর, ডোবা তথা জলাশয়ে ভাসিয়ে দেওয়া হয়৷ এটি একটি প্রাচীন সামাজিক রীতি রেওয়াজ৷ এমনটাই স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে৷ কয়েকজন বাসিন্দা আরও বলেন, নদী, পুকুর, ডোবায় বা জলাশয়ে বাচ্চা শিশুরা যাতে জলে ডুবে মারা না যায় বা কোনো বিপদ দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য জলের পীরের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এমন আচার পালনের রীতি৷ এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না৷ ভাদ্র মাসের শেষের দিকে বেড়ার বিক্রি অনেকখানি বাড়বে৷ আপাতত সেই আশাতেই বুক বেঁধেছেন বেড়া শিল্পী তথা মালাকার শিল্পীরা৷ পরবকে ঘিরে স্থানীয় শিশু কিশোরদের মধ্যে উৎসাহ রয়েছে যথেষ্ট৷