সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ
একদা বোমা গুলির আওয়াজে ঘুম ভাঙতো কিম্বা নিমেষে স্তব্ধ হয়ে উঠতো এলাকা। সেটা নিয়ে ছিল যেমন সংবাদের শিরোনামে। আবার বিভিন্ন তিক্ত অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে সেই গ্রাম আজ জেলার মধ্যে এক নিদর্শন হিসেবে এমনকি জেলার বাইরে পর্যন্ত সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চলেছেন। হ্যাঁ, সেটা বীরভূম জেলার নানুর ব্লকের পাপুড়িগ্রামের কথা। বীরভূম জেলা সহ পার্শ্ববর্তী জেলার ব্লাড ব্যাংক গুলিতে রক্ত সংকট দূরীকরণে একটানা নয় দিনব্যাপী রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে এই পাপুড়িগ্রামের হাইমাদ্রাসা প্রাঙ্গণে। এরূপ মহতী কাজে উদ্যোগ নেওয়ায় স্বভাবতই ফের সংবাদের শিরোনামে পাপুড়িগ্রাম। এদিন বোলপুর মহকুমা সিয়ান হাসপাতালে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে ভ্রাম্যমান রক্তদান বাসটিকে শতাধিক বাইক র্যালির মধ্য দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় পাপুড়ী হাইমাদ্রাসা রক্তদান শিবির মঞ্চের সামনে। সেখানে শিবিরের উদ্বোধন করেন শহীদের মা সাদেকা বিবি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেতুগ্রামের বিধায়ক শাহনাজ হোসেন, সমাজসেবী তথা শহীদ পরিবারের সদস্য কাজল শেখ সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। সোসাইটির কর্ণধার কাজল শেখ জানান, শহীদ সাজু মেমরিয়াল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উদ্যোগে একটানা নয়দিন ধরে চলা শিবিরে ধাপে ধাপে প্রায় দু’হাজার রক্তদাতা স্বেচ্ছায় রক্তদান করবেন এই শিবিরে। উল্লেখ্য ইতিপূর্বে সোসাইটির উদ্যোগে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কাজের নিদর্শন পাওয়া যায়। করোনা সংক্রমণের সময় গ্রামে শিবির স্থাপন করে গ্রামে সমস্ত পরিবারকে অংশগ্রহণ করিয়ে ১০০ শতাংশ ভ্যাকসিনেশন হয় স্বাস্থ্য দপ্তরের সহযোগিতায়, যাহা জেলার বুকে নজর কাড়েন প্রথম। এছাড়াও অসহায়, দুস্থ, গরিব মানুষদের জন্য ত্রাণ তথা খাদ্যসামগ্রী বিতরণ। সম্প্রীতির নিদর্শন হিসেবে গ্রামে উভয় সম্প্রদায়ের যৌথ উদ্যোগে দুর্গাপূজার আয়োজন। সেই সাথেই এবার রক্ত সংকট দূরীকরণে নানুর ব্লকের পাপুড়িগ্রামে সোসাইটির এমন দৃষ্টান্তমূলক কাজের জন্য জেলা তথা রাজ্যের কাছে নজির স্থাপন করে। বিশেষ উল্লেখ শিবিরে প্রথম রক্তদাতা হিসেবে রক্তদান করেন শহীদ পরিবারের সদস্য তথা সোসাইটির অন্যতম কর্ণধার কাজল সেখ। প্রতি দিন গড়ে দুইশত রক্তদাতা এখানে এসে রক্তদান করবেন। এই রক্ত শুধু বীরভূম না, জেলা ছড়িয়ে বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ জেলার ব্লাড ব্যাংক গুলিতেও পৌছে যাবে। আজ ২৩ অক্টোবর শুরু চলবে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বল উদ্যোক্তাদের মধ্যে থেকে জানা যায়।