সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ
ঐতিহ্যবাহী পৌষ উৎসব ও পৌষমেলা পূর্বপল্লির মাঠেই এবং শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের তত্ত্বাবধানে যেন অনুষ্ঠিত হয়, সেই আবেদন জানিয়ে বুধবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে যৌথভাবে স্মারকলিপি জমা দেয় বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি, হস্তশিল্প সমিতি ও বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ। যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে ‘শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা বাঁচাও কমিটি’ র ব্যানারে স্থানীয় হস্তশিল্প মার্কেট থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয় এবং বলাকা গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এদিন বিশ্বভারতী’র উপাচার্য ও রেজিস্টার না থাকায় স্মারকলিপি কে জমা নেবেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। শেষপর্যন্ত জনসংযোগ আধিকারিকের নিকট জমা দেওয়া হয় স্মারকলিপি। বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি’র পক্ষে সুনীল সিংহ ও সুব্রত ভকতের দাবি, শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পাশাপাশি, এর উপর প্রান্তিক স্তরের মানুষের রুজিরোজগার নির্ভরশীল। তাই আবেদন শতাব্দী প্রাচীন এই মেলা পূর্বপল্লী মাঠেই আয়োজন করুক বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েছে, যদি বিশ্বভারতী মাঠ, জল এবং বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করেন তাহলে মেলা করাতে তাদের কোনো আপত্তি নেই। শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট মূলত পৌষ মেলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকে। এমতাবস্থায় তাদের মতামত, যেহেতু মাঠ বিশ্বভারতীর এবং মেলা পরিচালনার জন্য জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকেন, যদি এগুলি পাওয়া যায় তাহলে ট্রাস্টের মেলা পরিচালনা করতে অসুবিধা নেই। কিন্তু বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো উত্তর না দেওয়াই স্বভাবতই মেলার জট কাটছে না। যদিও হস্তশিল্প সমিতির সম্পাদক আমিনুল হুদা জানান-২০১৯ সালে পৌষমেলা-র জন্য জমা নেওয়া সিকিউরিটি ডিপোজিট অর্থও এখনও ফেরত দেওয়া হয়নি ব্যবসায়ীদের। মেলা নিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এখনো কোন সিদ্ধান্ত না নিলেও কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, মেলা না হলেও সীমিত সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতেই ছাতিমতলায় বৈতালিক এবং উপাসনার মাধ্যমে পালিত হবে পৌষ উৎসব। অন্যদিকে বোলপুর পৌরসভার চেয়ারপারসন পর্না ঘোষ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে আবেদন করেছে, পূর্বপল্লী মাঠেই পৌষ মেলার আয়োজন করা হোক। তাতে সব রকম সহযোগিতা করবে বোলপুর পৌরসভা। সাংবাদিক সম্মেলন করে পর্না ঘোষ জানান, রাজ্য সরকার এবং বোলপুর পৌরসভার বোর্ড মিটিং এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পৌষ মেলা হবে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ না করলে বিকল্প ডাকবাংলো ময়দানে মেলার আয়োজন করা হবে।