শম্ভুনাথ সেনঃ
বীরভূমের সাঁইথিয়া থেকে প্রকাশিত “প্রগতি” পত্রিকার রজত জয়ন্তী বর্ষে (২৫তম) অনুষ্ঠিত হলো “প্রগতি লোকসংস্কৃতি উৎসব-২০২২”! সাঁইথিয়া শশীভূষণ দত্ত উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে আজ ৩০ ডিসেম্বর সারাদিন ধরে সাড়ম্বরে এই উৎসব উদযাপিত হয়। শুরুতেই প্রগতির পথচলা নিয়ে মুখকথা পরিবেশন করেন ড. আদিত্য মুখোপাধ্যায়। উদ্বোধক রূপে উপস্থিত ছিলেন বীরভূম জেলা সভাধিপতি তথা বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সাঁইথিয়া বিধায়ক নীলাবতী সাহা, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিনহা, অধ্যাপক ড. রবিন ঘোষ প্রমুখ। প্রকাশিত হয় “প্রগতি” পত্রিকার উৎসব সংখ্যা। এদিন ভাদুগান, মূর্শেদী, বহুরূপী, বাউল, পটের গান, রায়বেশে নৃত্য বীরভূমের এমন বিভিন্ন লোকসংস্কৃতি মঞ্চে পরিবেশিত হয়। স্থানীয় ৫০০ জন দুঃস্থদের হাতে তুলে দেওয়া হয় শীতবস্ত্র কম্বল। স্থানীয় পড়ুয়াদের নিয়ে চলে “বসে আঁকো” প্রতিযোগিতা। মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক নানা অনুষ্ঠান। এদিন এই উৎসবকে কেন্দ্র করে একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। প্রগতির ২৫ জন সদস্য স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন। সদর সিউড়ির ব্লাড সেন্টার এই রক্ত সংগ্রহ করে। এদিন এই প্রগতি উৎসবে জেলার পাঁচ কৃতি গুণীজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয় “প্রগতি অনন্য সম্মান”। উত্তরীয়, শাল, মানপত্র, একতারা ফল ও সবজির ঝুড়ি দিয়ে তাদের সম্মানিত করা হয়। সেই তালিকায় ছিলেন বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়, বরানগর রামকৃষ্ণ আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সারদাত্মানন্দ মহারাজ, বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মানবেন্দ্রনাথ সাহা, বিদ্যাসাগর কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপক পার্থশঙ্খ মজুমদার, বীরভূম সংস্কৃতি বাহিনীর কর্ণধার লোক গবেষক, শিক্ষক উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়। এছাড়া জেলার তিন শিল্পীকে দেওয়া হয় প্রগতি সম্মান। সেই তালিকায় ছিলেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপক সের-পাই শিল্পী লোকপুরের রুমা কর্মকার, ষাটপলসার পট শিল্পী অরুণ পটুয়া, ইলামবাজারের গালা শিল্পী শেখ ইউসুফ আলী। এই সম্মান তুলে দেন প্রগতির সম্পাদক দেবাশীষ সাহা। জেলার হস্তশিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় “প্রদর্শনী মেলা”। দুপুরে বিদ্যালয় অঙ্গন জুড়ে উপস্থিত অতিথি, শিল্পী, শ্রোতা-দর্শক বন্ধু, প্রগতি আত্মজনদের নিয়ে হয় চড়ুইভাতি। এদিন সারাদিনের অনুষ্ঠানে ছিল উপচে পড়া ভিড়।