শম্ভুনাথ সেনঃ
উৎসাহ আর উদ্দীপনা এবং প্রশাসনিক কড়া নিরাপত্তায় আজ ২৪ মার্চ থেকে শুরু হল বীরভূমের দ্বিতীয় বৃহত্তম “পাথরচাপুড়ী মেলা-২০২৩”। আনুষ্ঠানিকভাবে মেলা চলবে ৩০ মার্চ পর্যন্ত। করোনা আবহে বছর দুয়েক তেমনভাবে মেলা হয়নি। তবে এবার সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ৭ দিনের সম্প্রীতির এই মিলনমেলায় ইতমধ্যে উপস্থিত হয়েছেন জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ। আলোকমালায় সেজে উঠেছে দাতাবাবার মাজার শরীফ। বীরভূমের সিউড়ি-রাজনগর রাস্তার উপর “পাথরচাপুড়ি গ্রাম”। আর এখানে রয়েছে “দাতা মেহবুব শাহ ওয়ালীর মাজার”। সাধারণ মানুষের কাছে তিনি “দাতাবাবা” নামে পরিচিত। তিনি ছিলেন একজন সুফি সাধক। আজ থেকে ১৩১ বছর পূর্বে ১২৯৮ বঙ্গাব্দের এমন এক ৯ চৈত্র এই সুফি সাধক দেহত্যাগ করেন। ওই দিনটিকে স্মরণীয় করতে তাঁর তিরোধান দিবস উপলক্ষে পাথরচাপুড়ীতে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় “দাতাবাবার উরস মেলা”। আজ বিকেলে পাথরচাপুরী মসজিদের ইমাম জনাব শওকত আলী আশরফির কোরান পাঠ এবং বীরভূমের প্রিয়াঙ্কা সরকার খান ও মুর্শিদাবাদের আমানত ফকিরের দ্বৈত কন্ঠে লালন ফকিরের গানের মধ্য দিয়ে মেলার উদ্বোধন হয়। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বীরভূম জেলা সমাহর্তা বিধান রায়, জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, সংখ্যালঘু সেলের জেলা আধিকারিক পিয়ালী মন্ডল, স্থানীয় বিডিও শিবাশিষ সরকার, জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক অরিত্র চক্রবর্তী সহ বিভিন্ন আধিকারিকরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষে মঞ্চের বিভিন্ন অতিথি আধিকারিকরা হাজার হাজার মানুষের সাথে দাতা বাবার মাজারে চাদর চড়িয়ে শ্রদ্ধা জানান। উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে এদিন জেলাশাসক বিধান রায় পাথরচাপুরি প্রশাসনিক ভবনের চাবি তুলে দেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) বিশ্বজিৎ মোদকের হাতে। এবারই প্রথম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় আগত মেলা দর্শনার্থীদের দুই চাকা চারচাকা গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য কোন ফি নেওয়া হবে না। অন্যদিকে সিউড়ি স্টেশন বা বাসস্ট্যান্ড থেকে মেলা পর্যন্ত কম ভাড়ায় বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে উদ্বোধনী মঞ্চে ঘোষণা করা হয়। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন আবৃত্তি শিল্পী বরুন দাস ও নিবেদিতা লাহিড়ী। উল্লেখ্য, এদিন বিকেলে নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হয় নামাজ। মেলার প্রথম দিনেই ছুটে এসেছেন দেশ-বিদেশের অগণিত পুণ্যার্থীরা। কেউবা তাঁবু খাটিয়ে কাটাবেন রাত। সরকারিভাবে জল ও শৌচালয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার বিশাল এলাকা জুড়ে নানান পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। চলছে বিকি কিনি। মেলা চলবে আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত।