দ্বারবাসিণী মন্দিরে বারি পুজো উৎসব ঘিরে ব্যাপক মানুষের ঢল

সনাতন সৌঃ

ঝাড়খন্ড ঘেঁষা সিউড়ি থানার কেন্দুলী গ্রামে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী দ্বারবাসিণী মন্দিরে শ্রী শ্রী মনসা ও শ্রী শ্রী শীতলা মায়ের বারি পুজো উৎসব নয় দিন ব্যাপী উদযাপিত হলো মহাসমারোহে। এই পুজো উৎসব ঘিরে এলাকায় মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার লক্ষ্য করা যায়। গত২৮শে মার্চ প্রথা অনুযায়ী মন্দিরে ঘট স্থাপন করা হয়।প্রতহ মন্দিরে পুজো-, অর্চনা, চন্ডীপাঠ,ভোগ আরতি ও রাতে মনসা মঙ্গলের গান পরিবেশিত হয়। পূজার অষ্টম দিনে ৪ এপ্রিল এলাকা জুড়ে লবণ পালন করা হয়। বহু ভক্ত নরনারী মায়ের মন্দিরে পুজো দেন। নবম দিনে ৫ এপ্রিল শোভাযাত্রা সহকারে বারি বিসর্জন হয়। শোভাযাত্রায় বহু মানুষের ঢল দেখা যায়। মন্দির প্রাঙ্গণে মেলা বসে। মেলায় মিলন ক্ষেত্রে রূপ নেয়।এই অসময়ে কেন এত বড় পুজো উৎসবের আয়োজন? এই প্রসঙ্গে জনশ্রুতি আছে যে, বাংলার ১২০১ সালে প্রচন্ড গরমের সময় এই গ্রামে ব্যাপক কলেরা বসন্ত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।সাপের উপদ্রবও দেখা দেয়। তখনকার দিনে সে সময় চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ঠিক সেই সময়ে এক সাধু মহারাজের আগমণ ঘটে এই মন্দিরে। এই মহামারীর কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য গ্রামবাসীরা ঐ সাধু মহারাজের কাছে শরনাপন্ন হন।ঐ সাধু মহারাজ মন্দিরে ধ্যান করে ভক্তদের জানালেন যে, শুচি মন নিয়ে মায়ের পুজো করতে হবে। তাছাড়া মন্দিরে ঘট স্থাপন করে শ্রী শ্রী মনসা ও শ্রী শ্রী শীতলা মায়ের পুজো করে যেতে হবে বছরে একবার। তবেই এই রোগ নিবারণ সম্ভব হবে।ঐ সাধু মহারাজের আদেশে গ্রামবাসী ঢাকঢোল সহকারে মায়ের পুজো অর্চনা করেন এবং সাথে সাথে ঐ মহামারীর কবল থেকে রক্ষা পান।ঐ সাধু মহারাজের আদেশে গ্রামবাসীর উদ্যোগে প্রতি বছর এই চৈত্র মাসে চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী আজও চলে আসছে শ্রী শ্রী মনসা ও শীতলা মায়ের বারি পুজো উৎসব। তাছাড়া প্রত্যহ নিত্য নৈমিত্তিক সহকারে দ্বারবাসিণী মায়ের মন্দিরে পূজা অর্চনা হয়। এই পুজো উৎসবে উপলক্ষে পুজো কমিটির উদ্যোগে ফুটবল ময়দানে মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হলো কলকাতা আনন্দ নাট্য সংস্থার পরিচালনায় সামাজিক যাত্রাপালা -‘ কি লিখি তোমায় ‘ বইটি । এছাড়া ওই একই মঞ্চে বিচিত্র অনুষ্ঠান –নাচ, গান হাস্যকৌতুক আয়োজন করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *