শম্ভুনাথ সেনঃ
একটানা “নাম সংকীর্তন” গ্রাম বাংলার একটি প্রাচীন “ধর্মীয় লোক উৎসব”। এই উৎসব নিয়ে আসে গ্রামীণ সংহতি। বৈশাখ মাস থেকেই বীরভূমের অধিকাংশ গ্রামে অনুষ্ঠিত হয় এই ২৪ প্রহর ব্যাপী হরিনাম সংকীর্তন। রাত্রে লীলা মাহাত্ম্য বর্ণনে কীর্তন পালাগান। গ্রামের ধনী-দরিদ্র, জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে এই উৎসবে মেতে ওঠেন গ্রামের মানুষজন। বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের “পণ্ডিতপুর” গ্রামে ৭ জুন থেকে ৪ দিনের জন্য শুরু হয়েছে ২৪ প্রহর ব্যাপী হরিনাম সংকীর্তন। অনুষ্ঠিত হয় কীর্তনীয়া শ্রীপাদ দীনকৃষ্ণ ব্রহ্মচারী ও নীলাঞ্জনা সেনগুপ্তের কন্ঠে পালাকীর্তন। প্রায় প্রতিটি বাড়িতে এসেছে আত্মীয়-স্বজন, পরিজনেরা। এই ক’দিন সারা গ্রাম জুড়ে উৎসবের মেজাজ! রং-বেরঙের ফুল,আলোক মালায় অপরূপ সাজে সেজে উঠেছে গ্রামের “নাটমন্দির”। তিনদিন ধরে অবিরত হরেকৃষ্ণ নাম,রাত্রিতে কীর্তনীয়াদের “পালা কীর্তন”। বিকেল হলেই বসে বাউল গানের আসর। সন্ধ্যায় গৌরমণ্ডলী ও আরতী পর্বে উপচে পড়ে ভিড়। আজ ১০ জুন দুপুরে কুঞ্জবিলাস বর্ণন। আর তা দেখতে ঢল নামছে আবাল বৃদ্ধ বনিতার দল। হালসোত, দৌলতপুর, কামালপুর রূপশিমূল, গুনডোবা,বনহরি, দুবরাজপুর এলাকার মানুষজনের উপস্থিতিতে প্রতিদিনই লোকারণ্য উৎসব প্রাঙ্গণ!এবার অভূতপূর্ব আনন্দ-উৎসবে মাতোয়ারা সারা গ্রাম। বসেছে গ্রামীণ মেলা। গ্রামীণ সংহতি রক্ষায় এই মহামিলনের উৎসব আজও ধরে রেখেছে লোকায়ত ধর্মীয় সংস্কৃতি।