সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ
রক্তের সংকটে জে ভয়লার ব্লাড ব্যাংকগুলি রক্তশূন্যতা হয়ে পড়ে অনেক সময়। মুমূর্ষ, গর্ভবতী, থ্যালাসেমিয়া সহ বিভিন্ন রোগীদের রক্তের প্রয়োজনার্থে তার পরিবারকে এখান সেখান হন্তদন্ত হয়ে ঘুরে বেড়াতে হয়। শুধু এক ব্যাগ রক্তের জন্য। বহু পরিবার টাকার অভাবে যেমন রক্ত কিনতে পারে না, আবার অন্যদিকে টাকা থাকা সত্ত্বেও রক্ত সংগ্রহ করতে পারে না। সেই সমস্ত অসহায়তা দূরীকরণের লক্ষ্যে জেলা পুলিশ সহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে সারা বছরব্যাপী নিয়মিত রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এবারে এক ব্যতিক্রমী চিত্র জেলার বুকে ধরা পড়ে রক্তদান শিবিরের মাধ্যমে। বিশেষ করে মহররম উপলক্ষে মুসলিম সমাজে মার্সিয়ার মাধ্যমে যে মাতাম জারি হয় সেখানে বহু যুবককে দেখা যায় বুকে ব্লেড চিরে রক্ত ঝরিয়ে হাত চাপড়ে চাপড়ে মাতাম জারি করতে। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে মহররম কমিটির উদ্যোগে বুকের রক্ত ঝরিয়ে নয় বরং রক্তদান করে মানুষের জীবন বাঁচানোই মানবতার পরম ধর্মের লক্ষ্যেই প্রয়াশ চালিয়ে যাওয়ায় উদ্যোগী হয়ে উঠেছেন। সেই রকমই এবার মহররম পরব ঘিরে জেলার বিভিন্ন স্থানে রক্তদান শিবিরের চিত্র দেখা যায়। অনুরূপ ৩১ জুলাই বীরভূম ভলানটারি ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়েশন এর সহযোগিতায়, সিউড়ী ১নং ব্লকের “লিয়াড়া মুরাদপুর মহররম কমিটি”র উদ্যোগে মহররম উপলক্ষে একটা স্বেচ্ছায় রক্ত দান শিবিরের আয়োজন করা হয় l এদিন শিবিরে পুরুষ ও মহিলা সহ মোট ৫৩ জন রক্তদাতা স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন বলে জানা যায়। রক্তদান শিবিরে রক্তদাতাদের উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে উপস্থিত ছিলেন সদাইপুর থানার ওসি মহম্মদ মিকাইল মিয়া, বিশিষ্ট সমাজসেবী জিতা মুখার্জি ও রত্নাকর মন্ডল প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। উদ্যোক্তা তথা আয়োজকদের পক্ষ থেকে দুই গ্রামের মহরম কমিটির কর্ণধার মহঃ সাহিরুদ্দিন ও মহঃ আসারাফুলরা জানান, সিউড়ি সদর হাসপাতালের টেকনিশিয়ান বামদেব গড়াই এর পরামর্শে এবং মহরম কমিটিতে যুক্ত ব্যক্তিদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে এই মহান কাজে ব্রতী হই। অন্যদিকে বীরভূম ভলানটারি ব্লাড ডোনার্স এ্যাসোসিয়েশন এর জেলা সম্পাদক নুরুল হক এক সাক্ষাৎকারে জানান মহররম উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন স্থানে মহররম কমিটির উদ্যোগে রক্তদান শিবিরের কথা। বর্তমানে যুব সমাজও মহররমে বুকের রক্ত না ঝরিয়ে মানুষের প্রান বাঁচানোর লক্ষ্যে সচেষ্ট ভূমিকায় অবতীর্ণ, যা সমাজ সচেতনতামূলক কর্মসূচি হিসেবে শুভ লক্ষণ।