সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ
বীরভূম জেলার মহম্মদ বাজারের কয়লাখনি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলন অব্যাহত। বিশেষ করে আদিবাসীদের একটা অংশ তাদের জমি ছাড়তে নারাজ। সেই আন্দোলনে এখনো কিছুটা হলেও অটুট রয়েছে। যে কারণে তাদের আন্দোলন, এবং সেখানে আদিবাসীদের যে আশঙ্কা সেই আশঙ্কায় ভুক্তভোগীর চিত্র খয়রাসোল ব্লকের গঙ্গারামচক কোল মাইনস এলাকায় আদিবাসী অধ্যুষিত বাস্তবপুর গ্রামে। গঙ্গারামচক ডাব্লু বি পিডিসিএল এর কাছে স্থানীয় আদিবাসী অধ্যুষিত বাস্তবপুর গ্রামের জনগণ গত বাইশে জুলাই লিখিত অভিযোগ করেন যে, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। লিখিত ভিত্তিতে আবেদন বা অভিযোগ এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কোম্পানি কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় আজ ১ অগাষ্ট মঙ্গলবার গ্রামের সমস্ত পুরুষ মহিলা মিলিত হবে পিডিসিএল এর কয়লা বহনকারী গাড়িগুলো আটকে দেয়। সারাদিন ধরেই কার্যত অচল হয়ে রইল পিডিসিএল এর কয়লা বহন বা ট্রান্সপোর্টিং ব্যবস্থা। রবিলাল হেমরম, শিবলাল মারান্ডী সহ সমস্ত গ্রামবাসীদের অভিযোগ যে মাইন্স থেকে গ্রামের দূরত্ব ১০০ মিটার। তাই মাইনসে বোম ব্লাস্টিং করার ফলে বাড়িঘর ফেটে যাচ্ছে এমনকি ভেঙ্গেও যাচ্ছে। দুপুরবেলা বোম ব্লাস্টিং এর সাইরেনের শব্দে বাড়ি ছেড়ে ফাঁকা জায়গায় অপেক্ষা করতে হয়। গ্রামের নলকূপে নেই জল, পুরো অচল। এছাড়া কয়লা পরিবহনের সময় কয়লার গুড়ো খাবার সহ পুকুরের জলে মিশে একাকার। ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। স্নান করা ও ব্যবহারযোগ্য জলের সমস্যায় জর্জরিত। এজন্য পার্শ্ববর্তী দেড় কিলোমিটার দূরে ভাদুলিয়া গ্রাম থেকেই সেই জল সংগ্রহ করতে হয়। পাশাপাশি গ্রামে একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সেখানেও শিক্ষক শিক্ষিকারা অভিভাবকদের জানিয়ে দিয়েছেন যে স্কুলের ভেতরে পড়াশোনা করানো সম্ভব নয় ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে। কোম্পানির পক্ষ থেকে এলাকায় উন্নয়ন করার কর্মসূচি কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবপুর আদিবাসীদের জীবন যাত্রা বলে দেয় সেগুলো বিশবাঁও জলে। এনিয়ে গ্রামবাসীরা সকাল থেকে চাক্কা জ্যাম কর্মসূচি পালন করে। যদিও বিকেলে গ্রামবাসীদের সাথে কোম্পানির আলোচনায় বসার কথা থাকলেও বসা হয়নি বলে সূত্রের খবর। এবিষয়ে পিডিসিএল এর তত্ত্বাবধানে থাকা জেএমপিএল এর ম্যানেজার বিধান চন্দ্র খাঁর সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন ধরেননি এমনকি ম্যাসেজের উত্তর ও দেননি।