নয়াপ্রজন্ম প্রতিবেদনঃ
কবিগান। বর্তমানে কবিগান বাংলার লোক সংগীত জগত থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। আর বর্তমান তরুণপ্রজন্মও জানতে পারছে না বা বলা ভালো পরিচিত হতে পারছে না এই কবিগানের সাথে বা কবিয়ালের সাথে। কবিগান হয় সাধারণ দুই দলের মধ্যে। এখানে দলে যিনি গান করেন তাঁকেই বলা হয় কবিয়াল। দুই দলের কবিয়াল প্রশ্নোত্তরের খেলা করেন ছন্দের মাধ্যমে। কবিয়াল, কোনো বিষয়ে তাৎক্ষণিক ছন্দ মিলিয়ে পক্তি সৃষ্টি করে তাতে সুর দিয়ে তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন ওপর পক্ষের সামনে। ওপর পক্ষের কবিয়ালও তাঁর জবাব দেন একই ভঙ্গীতে। কবিগানের গায়ক নিজেই সুরকার, নিজেই গীতিকার বলা যেতে পারে। একে ওপরকে কথার মাধ্যমে পর্যূদস্ত করে আনন্দ লাভই লক্ষ্য। এভাবেই কাব্যিক আঙ্গিকে শ্রোতাদের মনোরঞ্জন করা হয়ে থাকে কবিগানের মাধ্যমে। কবিগানে থাকে গান, কবিতা, বিতর্ক, সমালোচনা এবং পর্যালোচনার বিভিন্ন বিষয়। দেশপ্রেম, মানবপ্রেম, সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চর্চা চলে কবিগানে। হারু ঠাকুর, ভোলা ময়রা, নিতাই বৈরাগী এমন বহু গুণী কবিয়াল বাংলার লোকসংগীতের জগতকে সমৃদ্ধ করেছেন। পর্তুগীজ বণিক এণ্টনী ফিরিঙ্গিও বাংলায় শক্তিশালী কবিয়ালদের মধ্যে একজন।
নতুন প্রজন্ম’র কাছে বাংলার এই লুপ্তপ্রায় লোকসংগীতকে তুলে ধরতে লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্রের উদ্যোগে বীরভূম জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর এবং বোলপুর মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের আয়োজনে ২৩ আগষ্ট থেকে বোলপুর মহকুমার সাধারণ পাঠাগারের প্রেক্ষাগৃহে শুরু হল ৩ দিনের আঙ্গিক ভিত্তিক (কবিগান) কর্মশালা। বেলা ১১টা থেকে বোলপুর মহকুমার সাধারণ পাঠাগারের প্রেক্ষাগৃহে এই কর্মশালা চলছে। ২৩ আগষ্ট প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন বোলপুর মহকুমার মাননীয় মহকুমা শাসক শ্রী অয়ননাথ মহাশয়, বোলপুর পৌরসভার উপ পৌরপিতা জনাব ওমর শেখ, জেলার তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক অরিত্র চক্রবর্তী সহ বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকবৃন্দ। অনুষ্ঠানে বরিষ্ঠ কবিয়ালদের সম্মননা দেওয়া হয়। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পগুলি (কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী, জয় জোহার, তপশিলী বন্ধু) নিয়ে আলোচনা হয়। ২৩ আগষ্ট থেকে ২৫ আগষ্ট এই তিনদিনের কর্মশালায় জেলার তিনটি মহকুমা থেকে মোট ৫০জন কবিগান শিল্পী প্রশিক্ষণ নেবেন বিশিষ্ট কবিয়ালদের সান্নিধ্যে থেকে।