শম্ভুনাথ সেনঃ
বিংশ শতাব্দীর এক বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি ছিলেন বীরভূমের ভূমিপুত্র, জন্মেছিলেন জেলার অন্যতম সতীপীঠ লাভপুরে। গত ২৫ জুলাই তাঁর জন্মদিনটি যথোচিত শ্রদ্ধায় ধাত্রীদেবতায় উদযাপিত হয়েছে। আজ ১৪ সেপ্টেম্বর, কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণ দিবস। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনে বীরভূমের লাভপুর চক্রের কালিকাপুরডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা এবারও হাজির হয় সাহিত্যিকের জন্মভিটা ও ধাত্রীদেবতায়। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের সঙ্গে সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীরা প্রত্যক্ষ করে তারাশঙ্করের আঁতুর ঘর, পুজোর ঘর, রামজী গোঁসাইএর চিমটা, তরবারি, কাছারি ঘর, তারাশঙ্কর সংগ্রহশালা এবং বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের মন্দিরগুলি। খুব উৎসাহ আর কৌতুহল নিয়ে দেখে তারাশঙ্করের আঁকা ছবি, কাটুমকুটুম, তাঁর ব্যবহৃত কলম, চশমা, পোশাক-পরিচ্ছদ, গ্রামোফোন, বসার চেয়ার, ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষার সার্টিফিকেট।
উল্লেখ্য, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভ্রাতুষ্পুত্র বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় সুন্দরভাবে আদিবাসী পড়ুয়াদের কাছে তুলে ধরেন গ্রাম জীবনের কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্করের জীবনগাথা। “Travelling as a part of education” তারাশঙ্করকে চিনুক, জানুক এই উদ্দেশ্যেই এই সফরসূচি বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পার্থ প্রদীপ সিংহ। বিদ্যালয় থেকে ২ কিমি দূরবর্তী এই ধাত্রীদেবতায় ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে তিনিও যান পায়ে হেঁটে। উল্লেখ্য, এই পার্থ প্রদীপ সিংহ রাজ্য সরকারের “শিক্ষারত্ন” সম্মানে ভূষিত হন ২০১৬ সালে। কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে গ্রহণ করেন সম্মাননা।অন্যদিকে বীরভূমের বুকে “জাতীয় শিক্ষক” হিসেবেও তিনি সম্মানিত হয়েছেন। ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে রাষ্ট্রপতির হাত ছুঁয়ে তিনি সম্মাননা গ্রহণ করেন। তিনি বীরভূমের শিক্ষক কুলের একজন চূড়ামনী। পুরস্কারের প্রাপ্ত অর্থও তিনি বিদ্যালয়ে দান করেন। এই বিদ্যালয়ের ১০০ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রীই আদিবাসী। তাঁর প্রাথমিক বিদ্যালয়টি জেলার বুকে এক দৃষ্টান্ত।