শম্ভুনাথ সেনঃ
জীবনের জন্য জীবিকার প্রয়োজন। তবে কৃষিনির্ভর বীরভূমে বৃষ্টির অনিশ্চিতার কারণে বহু মানুষের চাষের উপর ভরসা কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে রাজনগর, দুবরাজপুর, খয়রাশোল, মহম্মদবাজার এমন সব অনেক এলাকায় কোনো জলসেচের ব্যবস্থা নেই। তাই এইসব এলাকায় ধান চাষে একমাত্র ভরসা বৃষ্টির জল। কিন্তু ক’বছর ধরে বর্ষাকালে বৃষ্টির অনিশ্চয়তার কারণে মার খাচ্ছে চাষী। বীরভূমের তেমন কোনো শিল্প বা কলকারখানা নেই। ফলে বিকল্প জীবিকার সন্ধানে পথ খুঁজছে বীরভূমের মানুষজন। অল্প পুঁজি এবং কম পরিশ্রমে গ্রামীণ অর্থনীতিতে হাঁস পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। হাঁসের ডিমেরও বেশ জনপ্রিয়তা আছে। শীতকালে হাঁসের মাংসের চাহিদা থাকে ভালো। একেবারেই প্রাকৃতিকভাবেই পুকুর বা ডোবার জলে হাঁস পালন করা যায়। জলের মাছ, গুগলী, ঝিনুক, শামুক, পোকামাকড়, জলজ উদ্ভিদ এমন সব খাবার খেয়ে হাঁস বেঁচে থাকতে পারে। ফলে অন্য কোনো খাদ্যের প্রয়োজন খুব কম হয়। ৮০-১০০ টি হাঁস ঘরোয়া ভাবে পালন করতে পারলে একটি পরিবারের জীবিকা নির্বাহ খুব ভালোভাবে হতে পারে। এমনই পরামর্শ দিচ্ছেন প্রাণিসম্পদ কেন্দ্রের অধিকারীকরা। এখন আবার উন্নত জাতের হাঁসপালনে লাভের মুখ বেশি দেখছেন প্রাণী পালকরা। হাতের কাছেও প্রতিটি ব্লক প্রাণীসম্পদ কেন্দ্রে সমস্যা সমাধানের জন্য পরামর্শ ও সহযোগিতা পাওয়া যায় অনায়াসেই।
বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের বালিজুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের ‘হালসোত’ গ্রামে এক হাঁসপালক আদরা বাগদী জানিয়েছেন তার জীবন-জীবিকার কথা। আর সেই ছবি ধরা পড়েছে বীরভূমের সেরা পত্রিকা নয়াপ্রজন্মের ওয়েবসাইটের পাতায়। আদরা জানিয়েছেন এই হাঁস পালনেই তার সংসারে সচ্ছলতা এসেছে। এখন তাদের ৬০ টি পাতিহাঁস রয়েছে। সঙ্গে ৮ টি রাজহাঁস। বাড়ির কাছে “সায়ের” নামে একটি বিশাল জলাশয়ে এই হাঁসগুলি ছাড়া থাকে। ডাকলে একসঙ্গে হাজির হয় রাজহাঁস ও পাতিহাঁসের দল। হাঁসপালন করে এইভাবেই আদরার আনমনে দিন কাটে। এই খবর পড়ে কেউ হাঁসপালনে আগ্রহী হলে আমাদের সংবাদের সার্থকতা।