শম্ভুনাথ সেনঃ
সংক্রান্তিতে শেষ হয় সূর্যের উত্তরায়ণ, মাঘের শুরুতে এবার দক্ষিণায়নের পালা। পৌষ সংক্রান্তি শেষ হলেই এই পয়লা মাঘ কৃষিপ্রধান রাঢ় বাংলায় গ্রামে-গঞ্জে নানা দেবতার পুজো হয়। পয়লা মাঘ দিনটি তাই ‘আখ্যান দিন’ বলে চিহ্নিত। বীরভূম জেলার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামীণ সংহতি রক্ষায় লোকায়ত উৎসবে এই দিনটিতে মেতে ওঠেন গ্রামের মানুষজন। প্রতি বছরের মতো এবারও বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের খয়েরবন বনহরি গ্রামে “বাবা বাস্তুপুরুষ”এর স্থানে মিলন মহোৎসবের আয়োজন করা হয়। “বাস্তুপুরুষ” পুরুষানুক্রমে উপাসিত দেবতা। মৎস্য পুরাণে এই দেবতা সম্পর্কে উল্লেখিত আছে। এদিন সকাল থেকেই শুরু হয় পুজো-পাঠ, হোম- যজ্ঞ। মনস্কামনা পূরণের উদ্দেশ্যে নানা নৈবেদ্য নিয়ে হাজির হন হাজার হাজার ভক্ত-পুণ্যার্থী। হয় ছাগ বলী। পুজো শেষে পুরোহিত জীবন কুমার রায় ও সন্তোষ কুমার রায় উপস্থিত ভক্তদের মাথায় ছিটিয়ে দেন শান্তি বারি। খয়েরবন, মেটেলা, গুনডোবা, বনহরি, ঝাঁপড়তলা, বক্রেশ্বর, বেলবুনি, পণ্ডিতপুর, হালসোত, দুবরাজপুর এমন বহু গ্রামের মানুষ মিলিত হয় এই মহোৎসব মিলনমেলায়। এলাকায় ভোগ প্রসাদ গ্রহণের নিমিত্তে পালিত হয় অরন্ধন দিবস। অন্ততঃ ৭ হাজার মানুষ একসাথে গ্রহণ করে খিঁচুড়ি প্রসাদ। এই গ্রামের মানুষজন “বাবা বাস্তুপুরুষ” পূজা-মহোৎসবের জন্য বছরভর অপেক্ষায় থাকেন। প্রতিটি বাড়িতে আসেন আত্মীয় পরিজনেরা। গ্রামে এটিই প্রধান অনুষ্ঠান বলে জানিয়েছেন গ্রামেরই এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক গোপীনাথ মন্ডল।