শম্ভুনাথ সেনঃ
চলে গেলেন বীরভূমের এক বর্ণময় চরিত্রের মানুষ, নাট্যকার, সাহিত্যিক শিক্ষক অনুপম দত্ত। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। জন্মেছিলেন রাজ রাজাদের গ্রাম বীরভুমের হেতমপুরে। আজীবন শিক্ষকতা পাশাপাশি লেখালিখি। তাঁর রচিত নাটকের সংখ্যা অন্তত ৫০। লিখেছেন ৪৮ টি উপন্যাস, ১০০ বেশী ছোট গল্প,অজস্র কবিতা। আমৃত্যু তিনি সাহিত্য সাধনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ৯ এর দশকে আকাশবাণীতে তাঁর বেশ কয়েকটি নাটক সম্প্রচারিত হয়। আকাশবাণীতে শান্তিনিকেতন থেকে সম্প্রচারিত হয় তার নাট্য জীবন কথা। মাছের খেলা ও দুপুরের সূর্য এই লেখনীর জন্য ভারত সরকার কর্তৃক জাতীয় পুরস্কার পান। ১৯৯৮ তে দ্বাদশ ভক্তা চাডুম নাটকের জন্য পান “সুন্দরম পুরস্কার”। তাছাড়া সারা জীবন অন্যান্য বহু পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন অনুপম দত্ত। আমৃত্যু সাহিত্য সাধনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। সমগ্র জীবন জুড়ে তাঁর লেখনির মন্ত্র ছিল মানুষ হওয়ার। ২০১১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সিউড়ি সবুজের অভিযান অনুপম দত্তকে শিক্ষক সম্মাননা সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন “নয়াপ্রজন্ম” পত্রিকার সম্পাদক প্রয়াত কাঞ্চন সরকার। পরবর্তীতে অনুপম দত্তকে নিয়ে একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশিত হয়। তুলে ধরা হয় অনুপম দত্তের জীবন কথা। উল্লেখ্য, গত ২৪ জানুয়ারী বার্ধক্য জনিত কারণে স্থানীয় দুবরাজপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি ভর্তি হন। গত রাত ১ টা নাগাদ তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।আজ সকাল থেকেই তাঁর দুবরাজপুর “বসবাস” বাসভবনে অগণিত ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, সহকর্মী, বুদ্ধিজীবী মানুষজন মরদেহে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করেন। শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় দুবরাজপুর মামা ভাগ্নে পাহাড় সংলগ্ন “পাহাড়েশ্বর মহাশ্মশানে”। অনুপম দত্তের প্রয়াণ বীরভূমের সাহিত্য সংস্কৃতি ক্ষেত্রে এক অপূরনীয় ক্ষতি।