অনেকটা দেরীতে বর্ষা: কৃষি নির্ভর বীরভূমে জোরকদমে চলছে ধান রোয়ার কাজ, হতাশ চাষীরা দেখছেন আশার আলো

শম্ভুনাথ সেনঃ

কৃষি নির্ভর বীরভূম আর বীরভূমের কৃষি মূলত বৃষ্টি নির্ভর। ৭০ শতাংশ মানুষের জীবন-জীবিকা কৃষির উপর নির্ভরশীল। উল্লেখ্য, এই খারিফ মরশুমে সারা বীরভূমে ৩ লক্ষ ১২ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়। এবার বর্ষা ঋতুর দেড় মাস ধরে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে আশা আর আশঙ্কায় দিন গুনছিলেন কৃষক। দেরিতে হলেও অবশেষে এবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। হতাশাগ্রস্ত চাষীরা দেখছেন আশার আলো। জোর কদমে চলছে ধান রোয়ার কাজ। দুবরাজপুর ব্লকের কামালপুর, হালসোত, পণ্ডিতপুর, বালিজুরি এমন সব এলাকার চাষের ছবি ধরা পড়েছে বীরভূমের সেরা নয়াপ্রজন্ম পত্রিকার ওয়েবসাইটের পাতায়। উল্লেখ্য, গত ১৬ শ্রাবণ থেকে নেমেছে এবার বর্ষার বৃষ্টি। এ মরসুমের সবচেয়ে ভারী বৃষ্টি হয় এদিন থেকেই। প্রায় প্রতিদিন উপযুক্ত বৃষ্টি হওয়ার কারণে দুবরাজপুর,
রাজনগর, খয়রাশোল এমন সব এলাকায় ধান রোয়ার কাজ চলেছে জোর কদমে। একটানা বৃষ্টির দরুন পুকুর, ডোবা অনেকটা ভরে গেছে। আশা আর আশঙ্কার দিন কাটানো কৃষকরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখন চাষের কাজে ব্যস্ত। বৃষ্টির অভাব না থাকলেও বেশ কয়েকটি কারণে অবশ্য চাষ চলছে ধীরগতিতে। দেরিতে বৃষ্টি হওয়ায় যেমন বীজের বড্ড অভাব তেমনি অনেক জমি থেকে রাতারাতি বীজ (আফর) চুরি হয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে কৃষি মজুর, ধান পোঁতার জন্য মহিলা শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এখন হাল বলদের চাষ নেই বললেই চলে। তাই চাষের কাজে ট্রাকটারই একমাত্র ভরসা। কিন্তু সেই ট্রাকটার ভাড়া পেতেও সময় লাগছে। ফলে পিছিয়ে যাচ্ছে চাষের কাজ। এ কথা জানিয়েছেন দুবরাজপুর ব্লকের হালসোত গ্রামের প্রান্তিক চাষী বীরেন সরকার, সন্তোষ বাগদীরা। উল্লেখ্য, বর্ষাকালে এবার ৯০ শতাংশ বৃষ্টি ঘাটতি ছিল। ভূগর্ভস্থ জলে ময়ূরেশ্বর, মুরারই, সাঁইথিয়া লাভপুর, ইলামবাজার এলাকায় ধান রোয়া শুরু হলেও দুবরাজপুর, খয়রাশোল, মহম্মদবাজার, রাজনগর এইসব ব্লক এলাকায় বৃষ্টি অভাবে কোনো জমিতে ধান রোয়া যায়নি। তবে এভাবে বৃষ্টির ধারা বজায় থাকলে আমন ধান রোয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন চাষীরা। কৃষি নির্ভর বীরভূমী মানুষজন সেই আশা নিয়ে এখন দিন গুনছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *