শম্ভুনাথ সেনঃ
পরপর তিন দিনের একটানা বৃষ্টি এবং সঙ্গে ঝোড়ো দমকা বাতাসে কার্যত নাজেহাল অবস্থা বীরভূমবাসীর। বহু জায়গা জলমগ্ন। জেলার বিভিন্ন জায়গায় যেমন বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর মিলেছে তেমনি গাছ পড়ে রাস্তা হয়েছে অবরুদ্ধ। অনেক গ্রামেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। আহত হয়েছেন অনেকেই। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বিভিন্ন এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। একটানা বৃষ্টির ফলে বীরভূমের নদীগুলো বিপদ সীমার উপর দিয়ে বয়ছে। এই উদ্বেগপূর্ণ আবহাওয়ায় বীরভূম জেলা প্রশাসন সতর্ক নজরদারি চালাচ্ছেন। কোনো রকম ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আগেই যাতে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। সিউড়ি থেকে বোলপুর যাওয়ার পথে একটি যাত্রী বোঝাই অটোর উপর ভেঙে পড়ে আস্ত গাছ। যে ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে একজনের। বেশ কয়েকজন আহত। মৃত ও আহতদের দুজনকেই তড়িঘড়ি উদ্ধার করে সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গাছটি ওই অটোর উপর ভেঙ্গে পড়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে সিউড়ি থানার অন্তর্গত মল্লিকপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে গরুইঝোড়া ডাঙ্গালপাড়ায় গতকাল রাতভর বৃষ্টির জেরে গোয়াল ঘরের উপর একটি বড় গাছ পড়ে ভেঙ্গে পড়ে।মারা যায় গরু ।ক্ষতি হয় সেই গোয়াল ঘরের ভেতরে থাকা বাইক এবং সাইকেল। ঝাড়খন্ডেও প্রবল বৃষ্টির কারণে জলস্তর বাড়ছে বীরভূমের একাধিক নদীতে। সিউড়ী তিলপাড়া জলাধার থেকে ৭ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ময়ূরাক্ষী নদীতে জল বাড়ায় ভেঙেছে সাঁইথিয়ার অস্থায়ী ফেরিঘাট। দারকা নদীর জল বাড়ায় সন্নিহিত গ্রাম গুলি জলমগ্ন। অজয়ের জলের তোরে জয়দেব কেন্দুলির ফেরিঘাট ভেঙে যাওয়ায় বীরভূম-পশ্চিম বর্ধমান দুই জেলার মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে একনাগাড়ে বৃষ্টির কারণে ভেঙেছে কামারডাঙ্গাল গ্রামের কাছে বক্রেশ্বর নদীর ব্রিজ। যাতায়াত বন্ধ বেশ কয়েকটি গ্রামের। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সিউড়ির সাথে। পাশাপাশি জল বেড়েছে চন্দ্রভাগা নদীতেও। ব্রিজের ওপর দিয়ে বইছে জল। সিউড়ি দুবরাজপুর রুটে তীর্থক্ষেত্র বক্রেশ্বরে ব্রীজের উপর দিয়ে জল বইছে। বীরভূমের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে দুবরাজপুর এলাকায় পরিমাণ ১৩৩ মিলিমিটার। অন্যদিকে অজয় নদে জল বাড়ায় ভেঙে গেছে জয়দেব কেন্দুলির ফেরিঘাট। পশ্চিম বর্ধমানের সাথে বীরভূমের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।