বীরভূমের সতীপীঠ বক্রেশ্বরে বাসুদেব বাবার ৮৪ তম আবির্ভাব উৎসব

শম্ভুনাথ সেনঃ

বীরভূমের অন্যতম সতীপীঠ বক্রেশ্বর মহাশ্মশান সংলগ্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে “বাসুদেব মিশন ইন্টারন্যাশনাল” নামে এই আশ্রমিক প্রতিষ্ঠান। আজ ২ এপ্রিল, ২০২৫ এই আশ্রমে সাধক বাসুদেবের ৮৪ তম আবির্ভাব তিথি উৎসব সাড়ম্বরে উদযাপিত হয়। সকাল থেকেই চলে নাম সংকীর্তন, যাগ-যজ্ঞ ও ধর্মীয় আলোচনা সভা। দুপুরে তাঁর সমাধিস্থলে ভোগ নিবেদন করা হয়, চলে স্মৃতিতর্পণ। চলে সাধু-সন্ত, ভক্ত ও নরনারায়ণ সেবা। কিন্তু কে এই সাধক বাসুদেব!?
১৯৪২ সালের এমন এক ২ এপ্রিল বিহারের মুঙ্গের জেলার জামালপুরে চট্টোপাধ্যায় পরিবারে তাঁর জন্ম। মাত্র ৮ বছর বয়সে আধ্যাত্ম শিক্ষার হাতেখড়ি। তখন থেকেই বেরিয়ে পড়েন সত্যের সন্ধানে। একদিকে আধ্যাত্ম সাধনা অন্যদিকে মেধাবী ছাত্রটি পড়াশোনা চালিয়ে যান। রুরকি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্জন করেন। কিন্তু এই পার্থিব প্রাপ্তিতে তাঁর চিত্ত ভরেনি। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন তীর্থক্ষেত্রে চলে তাঁর নিরন্তর সাধনা! এই তথ্য জানিয়েছেন আশ্রমের অধ্যক্ষা ভৈরবী আনন্দময়ী দেব্যম্বা সকলের পরিচিত জ্যোতি মা। উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালের ২৯ জুলাই সাধক বাসুদেব বাবা অনন্তলোকে বিলীন হন। তাঁর দেহ সমাধিস্থ করা হয় এই সতীপীঠ বক্রেশ্বরে। আর তখন থেকেই দেশ-বিদেশের অনুরাগী ভক্ত-শিষ্যদের আর্থিক সহায়তায় গড়ে ওঠে “বাসুদেব মিশন ইন্টারন্যাশনাল” নামে এই আশ্রম।
বাসুদেব বাবার সমাধি মন্দিরে আজ ২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত পূজা পাঠ আরতি ভোগ নিবেদন পর্ব। উল্লেখ্য, গত ২০০৮ সালে বাসুদেব বাবার স্বপ্নাদেশে এক বিদেশী ভক্ত শিষ্য ইটালির মিস্টার পাইরাস সাহেব এখানে ১০ ফুট উচ্চতার একটি “শ্বেত প্রবাল শিবলিঙ্গ” প্রতিষ্ঠা করেন। এই শিবলিঙ্গ দর্শনে বছরভর এখানে ছুটে আসেন বহু ভক্ত-পুণ্যার্থী। মিশনের ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক উৎপল ভরদ্বাজ, মঠাধ্যক্ষ অচিন্ত্য মহারাজ,স্থানীয় অজয় গুঁই, উৎপল রায়, জয়দীপ মজুমদার এমন সব অনুরাগী শিষ্যদের সহযোগিতায় আশ্রমের উন্নয়ন ক্রমে এগিয়ে চলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *