ফুটপাত ব্যবসায়ী উচ্ছেদের এক বছরেও প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি, রামপুরহাটে মহকুমা শাসকের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ ফুটপাত ব্যবসায়ীদের

সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ

রামপুরহাট শহরের ফুটপাত ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদের এক বছর কেটে গেছে। কিন্তু আশ্বাস অনুযায়ী তাদের পূনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা হয়নি। উল্লেখ্য ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে রামপুরহাট পৌরসভার মধ্যে থাকা সমস্ত ফুটপাতের দোকানপাট গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়ে পৌর প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিল, খুব শীঘ্রই তাদের পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু বাস্তবে এক বছর অতিক্রান্ত হলেও আজও কোন স্থায়ী ব্যবস্থা হয়নি। সেই হিসেবে এদিন বৃহস্পতিবার ক্ষোভে ফেটে পড়লেন রামপুরহাট শহরের উচ্ছেদ হওয়া ফুটপাত ব্যবসায়ীরা।বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের বিভিন্ন এলাকা পরিক্রমা করে রামপুরহাট মহকুমা শাসকের দপ্তরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন। “পুনর্বাসন চাই, প্রতিশ্রুতি পূরণ কর”, “ফুটপাত আমাদের জীবিকা, তা কেড়ে নেওয়া চলবে না।” প্ল্যাকার্ড হাতে শ্লোগানের মাধ্যমে মুখরিত করে তোলে এলাকা।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গত এক বছরে তারা চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় অস্থায়ীভাবে পণ্য সাজিয়ে ব্যবসা করতে হচ্ছে। কখনও পৌরসভার উচ্ছেদ অভিযান, কখনও পুলিশি হস্তক্ষেপে তারা ক্রমাগত হেনস্তার শিকার।
ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, ত্রিপল টাঙিয়ে কষ্টের মধ্যে ব্যবসা চলছে, কোনরকমে পেট চালাচ্ছি। বর্ষায় ভিজে যাচ্ছে মাল, গরমে কেউ আসে না। সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভুলিয়ে রেখেছে আমাদের।” “আমরা গরিব মানুষ। আমাদের দোকানই একমাত্র ভরসা। ওটা ভেঙে দেওয়ার সময় আমাদের বলা হয়েছিল সরকার আমাদের পূর্ণবাসন দেবে। অথচ এক বছর কেটে গেলেও আমরা এখনো রাস্তায়। আমাদের কষ্ট কে দেখবে?”
এদিনের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে রামপুরহাট পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন ভকত জানান, “আমরা ফুটপাত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য ডাকবাংলা এলাকায় পশু চিকিৎসা হাসপাতালের পাশের জমি চিহ্নিত করেছি। সেখানে স্থায়ী দোকান তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। তবে কিছু সরকারি নথিপত্র এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। খুব শীঘ্রই সেই প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে আশা করছি।” তিনি আরও বলেন, “আমি ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করছি, যতদিন না স্থায়ী দোকান হচ্ছে, ততদিন ধৈর্য্য ধরে অস্থায়ীভাবে ব্যবসা চালিয়ে যেতে। আমরা পাশে রয়েছি।”
তবে ফুটপাত ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রশাসনের এই আশ্বাস নতুন নয়। এর আগেও এমন একাধিক প্রতিশ্রুতি তারা পেয়েছেন, কিন্তু বাস্তবায়ন কিছুই হয়নি। তাই এবার তাঁরা সুনির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পুনর্বাসন না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে পথে নামার হুঁশিয়ারি দেন। ফুটপাত ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে শাহাজাদা হোসেন বলেন, “আমরা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চুপ করে আছি। প্রশাসন শুধু মিটিং আর ফাইল চালাচ্ছে, কাজ কিছুই করছে না। এবার আর আমরা চুপ থাকব না। পুনর্বাসন না দিলে আমরা আরও বড় আন্দোলনে নামবো।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *