বীরভূমের মহম্মদবাজারে ডেউচা-পাঁচামী কয়লা খনির নামে দূর্নীতিতে যুক্ত রাজ্য-কেন্দ্র: বিস্ফোরক সিপিআইএমের মহম্মদ সেলিম

শম্ভুনাথ সেনঃ

বীরভূমের ডেউচা-পাঁচামীতে অবিলম্বে খনন কাজ বন্ধের দাবিতে বীরভূমের বোলপুরে ১৪ জুলাই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন সিপিআইএম দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। কয়লা খনির নামে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর পাথর উত্তোলন করার পরিকল্পনা, প্রকাশ্যে এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বক্তব্যে বলেন, “ডেউচা-পাঁচামি একটা বড় স্ক্যাম! খনি গড়ার লক্ষ্য নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল সরকার পিসি-ভাইপো মিলে গোরু, কয়লা, বালি পাচার, নকল ডিসিআর, শিক্ষক নিয়োগ দূর্নীতির মতো এটাও একটা দূর্নীতি। আজ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কোন অনুমোদনই পায়নি। “১ লক্ষ লোকের কাজ হবে” পুরোটাই ভাঁওতা বাজী। এই কয়লা খনির দূর্নীতিতে যুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি জানান,”ডাব্লুবিপিডিসিএল পাথর তোলার নাম করে ১২ একর জমিতে কাজ হবে এমন একটা পরিকল্পনা দিয়েছে। কেন্দ্র সরকারও যুক্ত। এই জালিয়াতিতে এখানকার অফিসারেরাও যুক্ত৷ মাফিয়ারা এক জোট হয়েছে। তাদের বেআইনি কারবারকে আইনি করার চেষ্টা এই ডেউচা-পাঁচামি কয়লা খনি প্রকল্প৷” তাঁর অভিযোগ, এই তৃণমূল সরকার সমস্ত বেআইনি কাজ করাচ্ছে জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারকে সামনে রেখে। এদিন মূলত এই কয়লা খনি প্রকল্পের নামে দূর্নীতির প্রতিবাদে বোলপুরে বিক্ষোভ মিছিল করে সিপিআইএম৷ উপস্থিত ছিলেন দলের পলিটব্যুরোর সদস্য রামচন্দ্র ডোম, জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ প্রমুখ৷ শান্তিনিকেতন রোডে মিছিলের পর বোলপুর চৌরাস্তায় বৃষ্টি উপেক্ষা করেই পথসভা করা হয়৷ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়েও ডেউচা-পাঁচামির দূর্নীতি নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারকে এক হাতে নেন মহম্মদ সেলিম৷
প্রসঙ্গত, বীরভূমের ডেউচা-পাঁচামিতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম খোলা মুখ কয়লা খনি হতে চলেছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী শুরু হয়েছে খনন কাজও৷ কিন্তু, এই খনির বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সরব এলাকার বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ। এই এলাকায় অধিকাংশ আদিবাসী অধ্যুষিত মানুষজন বসবাস করেন। এখানে খনি হলে কমপক্ষে ২০ টি গ্রামের ২১ হাজার মানুষকে অন্যত্র সরাতে হবে৷ প্রাকৃতিক পরিবেশের চরম ক্ষতি হবে৷ ধ্বংস হবে বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল, জলাভূমি। তাই প্রথম থেকেই খনি বিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন আদিবাসী মানুষজন। তিনি বলেন, কয়লা উত্তোলনের নামে পাথর কারবারে নজর রাজ্যের৷ প্রথম থেকেই এই বেআইনি কারবারে যুক্ত রয়েছে বীরভূমের পাথর ব্যবসায়ী হলেন টুলু মণ্ডল৷ তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *