শম্ভুনাথ সেনঃ
দুর্গোৎসব দোড়গোড়ায়। শিউলি ফোটা শরতের সকাল, মাঠে ঘাটে কাশফুল, পুকুরে প্রস্ফুটিত শালুক আর পদ্ম জানান দিচ্ছে মা আনন্দময়ীর আগমন বার্তা। আর এই শারদ উৎসবে অসহায় শিশুদের মুখে হাসি ফোটানোর লক্ষ্যে “বীরভূম লাল মাটির দেশ” নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ২৭ সেপ্টেম্বর সিউড়ী ডি.আর.ডি.সি হলে আয়োজন করে “উৎসবে আনন্দদান” অনুষ্ঠান। মাঙ্গলিক প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন বীরভূম জেলা সমাহর্তা বিধান রায়। সঙ্গে ছিলেন তাঁর সহধর্মিনী ইন্দ্রানী রায়। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক কৌশিক সিনহা, সদর মহকুমা শাসক অনিন্দ্য সরকার সহ সংস্থার সদস্য ও গুণী ব্যক্তিত্বরা। প্রথমেই এই লাল মাটির দেশ পরিবারের লক্ষ্য ও আগামী পরিকল্পনা নিয়ে মুখকথা পরিবেশন করেন সংস্থার সম্পাদক তাপস দত্ত। এদিন ৩-১৬ বছর বয়সী দেড় হাজারেরও বেশি দুঃস্থ শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হয় নতুন জামা। “ছাত্রবন্ধু” কর্মসূচিতে উচ্চশিক্ষায় উৎসাহ দানের লক্ষ্যে ৯ জন পড়ুয়ার হাতে এককালীন ২,০০০ টাকা ক’রে চেক তুলে দেওয়া হয়। জেলার বুকে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন এমন পাঁচ গুণীজন ব্যক্তিত্বকে দেওয়া হয় স্মারক সম্মাননা। সেই তালিকায় ছিলেন লাভপুরের খ্যাতনামা চিকিৎসক সুকুমার চন্দ্র, সিউড়ি সদর হাসপাতালের বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনামিত্র বারিক, বক্রেশ্বর বাণপ্রস্থ আশ্রমের কর্ণধার তথা সমাজসেবক দুর্গেশ গিরি মহারাজ, শান্তিনিকেতনের বিশিষ্ট বাউল শিল্পী নুর বাবা ফকির এবং কৃতি ফুটবল খেলোয়াড় পাপিয়া মুর্মু। জেলার যশশ্বী লেখকদের লেখনী সম্ভারে বার্ষিক শারদ সংখ্যা “আগমনী” নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। অনুষ্ঠান শেষে পরিবেশিত হয় জনপ্রিয় মুখোশ নৃত্য “মহিষাসুরমর্দিনী”। উল্লেখ্য, “বীরভূম লাল মাটির দেশ” নামে এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ২০১৭ সালে সরকারি নিয়মে নিবন্ধীকৃত হয়েছে। কিন্তু আজও মেলেনি কোনো সরকারি সাহায্য। জেলার বিভিন্ন প্রান্তের দেড়শ জন সদস্যের শ্রম, সহায়তা; সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহায্যের আবেদনক্রমে সাড়া এবং চেনা-জানা মানুষের আর্থিক দান, সহযোগিতা নিয়ে এমন অনুষ্ঠান ৬ বছর ধ’রে চলছে বলে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়।