বীরভূম জেলায় বসন্ত উৎসব

সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ

হোলি উৎসবে কচিকাঁচাদের সাথে আনন্দে সামিল লোকপুর থানার পুলিশ

জেলার বিভিন্ন শহর থেকে গ্রামীণ এলাকায়ও হোলির উৎসব আনন্দে মাতোয়ারা কচিকাঁচাদের সাথে বড়োরা পর্যন্ত সকলেই। জেলা পুলিশ প্রশাসনিক ভাবে আগাম মিটিং করে বিভিন্ন স্তরের মধ্যে বার্তা দেওয়া হয়েছে “ধর্ম যার যার- উৎসব সবার”। এই বিষয়কে সামনে রেখে নিজের নিজের উৎসবে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। দোল উৎসবের দিনে কোনো ভাবেই আইন নিজের হাতে না নেওয়া, ভুল করে যদি কেউ রং দিয়ে দেয় তাহলে কোনোরূপ ঝামেলা না করা, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো যাবে না বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়। পুলিশ শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার তাগিদে সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল ভ্যানে চালাচ্ছেন টহলদারি। কোথাও কোথাও কচিকাঁচাদের সাথে আনন্দে সামিল হতে ও দেখা গেছে। যারপরনাই কচিকাঁচাদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবকরাও আনন্দিত বোধ করছেন। ছোট ছোট বাচ্চাদের দল পুলিশের গাড়ি ঘিরে পুলিশদের কে আবির মাখিয়ে দিচ্ছেন। বাচ্চাদের দল পুলিশের কপালে, গালে আবির মাখিয়ে দিতে পেরে খুব খুশি। এমনই চিত্র দেখা গেল লোকপুর থানার নাকড়াকোন্দা গ্রামে। লোকপুর থানার এএসআই আব্দুস সামাদ সহ গাড়িতে থাকা অন্যান্য পুলিশ ও সিভিক ভলিন্টিয়ারদের রংবেরঙের ভেষজ আবির মাখিয়ে আনন্দের চিত্র ফুটে উঠে বাচ্চাদের মধ্যে। পুলিশ অফিসার ও বাচ্চাদের জন্য লজেন্স আনিয়ে মহা আনন্দে বিতরণ করেন। জনসংযোগের এ এক নতুন মাত্রা পুলিশ পাবলিকের বলে স্থানীয়দের অভিমত।


বসন্ত উৎসব পালন খয়রাশোল পরিচয় সংগঠনের উদ্যোগে

বীরভূম জেলার খয়রাশোল পরিচয় কাব্য ও নাট্যচর্চা কেন্দ্রের পরিচালনায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতনের আদলে “পলাশে আবিরে রবিঠাকুর”-নামাঙ্কিত অনুসারে বসন্ত উৎসব পালন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই কবিতা, আবৃতি, নাচ, গান ও রংবেরঙের ভেষজ আবির খেলার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভসূচনা হয়। “ওরে গৃহবাসী—“, গানের তালে তাল মিলিয়ে নাচতে নাচতে প্রভাত ফেরীর মধ্য দিয়ে গ্রাম পরিক্রমা করা হয়। প্রভাত ফেরীটি খয়রাশোল গ্রাম, বাজার, বাসস্টপ, থানা সহ স্থানীয় বিভিন্ন এলাকা পরিক্রমা করে। বোলপুর শান্তিনিকেতনের আদলে গ্রামীণ এলাকায় বসন্ত উৎসবের আমেজে মেতে ওঠে কচিকাঁচাদের সাথে তাদের অভিভাবকরাও। খয়রাশোল পরিচয় সংগঠনের বসন্ত উৎসব পালন এবার তৃতীয় বছরে পদার্পণ করলো। কচিকাচাদের আবদারে স্থানীয় খয়রাশোল থানার পুলিশ ও তাদের বসন্ত উৎসব তথা আনন্দ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে এবং উপস্থিত সকলকে মিষ্টি মুখ করান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী তন্ময় মুখার্জী, খয়রাশোল থানার এ এস আই দয়াল দাস, পুলিশ কর্মী বরুন কর। এছাড়াও অভিভাবক হিসেবে ছিলেন পূর্বাশা চৌধুরী, চৈতালী মন্ডল, পল্লব ঠাকুর প্রমুখ। একান্ত সাক্ষাৎকারে শান্তিনিকেতনের আদলে আয়োজিত বসন্ত উৎসব সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দেন পরিচয় কাব্য ও নাট্যচর্চা কেন্দ্রের অন্যতম সদস্যা অরণ্যা মুখার্জী।


শান্তিনিকেতনের আদলে বসন্ত উৎসব পালন লোকপুর কৃষ্টি লোক গোষ্ঠীর

আজ জেলার নানা প্রান্তে নানান সংগঠনের পক্ষ থেকে পালিত হয় বসন্ত উৎসব। অনুরূপ খয়রাসোল ব্লকের লোকপুর কৃষ্টি লোক সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর উদ্যোগে ও এদিন বিকেলে শান্তিনিকেতনের আদলে হলুদ শাড়ি, পলাশ ফুলের মালা পরিহিত কাঠি নাচের মাধ্যমে স্থানীয় লোকপুর থানা, বাসষ্ট্যান্ড, বাজার, পঞ্চায়েত সহ বিভিন্ন এলাকা পরিক্রমা করে। জনবহুল এলাকায় কচিকাঁচাদের দল নৃত্যানুষ্ঠানও করে। বসন্ত উৎসব শান্তিনিকেতনের আদলে এখন গ্রামীণ এলাকার মধ্যেও প্রচলন শুরু হয়ে গেছে বেশ কয়েক বছর যাবৎ কৃষ্টি লোক গোষ্ঠীর উদ্যোগে। বসন্ত উৎসব ঘিরে কচিকাঁচাদের সাথে সাথে অভিভাবকদের মধ্যেও ভীড় লক্ষনীয়। কৃষ্টি লোক পরিচালিত বসন্ত উৎসব পালনের মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন একঝাঁক তরুণ শিক্ষক। উপস্থিত ছিলেন রামধনু পাবলিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ দত্ত থেকে শুরু করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক মিন্টু দত্ত, সিদ্ধার্থ দত্ত, রাজেন্দ্র প্রসাদ দে, খোকন আঢ্য প্রমুখ শিক্ষকগণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *