শম্ভুনাথ সেনঃ
বুদ্ধ পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে ধর্মরাজ পূজা উপলক্ষে বীরভূমের সবচেয়ে বড় “চড়ক মেলা” অনুষ্ঠিত হল দুবরাজপুর ব্লকের মেটেলা গ্রামে। উল্লেখ্য, ভক্তদের আর্থিক সহায়তায় প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এবছর ধর্মরাজ মন্দির নির্মাণ হয়েছে। নবনির্মিত এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা হয় গত ২৮ এপ্রিল। এই পুজো কত বছরের পুরোনো তা বলা বড় কঠিন। তবে এই পুজোকে ঘিরে লোকায়ত উৎসবে মেতে ওঠেন মেটেলা সন্নিহিত গুন্ডোবা, বনহরি, বেলবুনি, বক্রেশ্বর, ঝাঁপরতলা, রাজগঞ্জ, করমকাল পণ্ডিতপুর এমন ১০-১২ টি গ্রামের মানুষজন। গতকাল রাত্রে ১২.৩০ টায় চারশো দেয়াশি ভক্ত্যাদের তিন দিন ধরে উপোস থাকার পর পিঠে ও জিহ্বায়ও বান ফোঁড়া হয়। উল্লেখ্য, ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার এই কৃচ্ছসাধন বন্ধ করলেও এখানে এখনো তার প্রচলন রয়ে গেছে। বিজ্ঞানকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে জিহ্বা ও পিঠে বাণ ফোড়ে গ্রামের কর্মকার পরিবার। পরে সেই সব ভক্ত্যাদের এক এক করে চড়ক গাছে শূন্যে দোলানো হয়। ১২.৪০ নাগাদ সেই চড়ক গাছের শীটকে ভেঙে যায়। তবে ভক্ত্যার কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। পরে আবার রাত্রি সাড়ে তিনটে নাগাদ শুরু হয় নতুন ভাবে চড়ক ঘোরা। নবনির্মিত ধর্মরাজ মন্দিরে দুদিন ধরে চলে পুজো-পাঠ, হোম-যজ্ঞ। পুজোকে কেন্দ্র করে দেওয়া হয় ছাগবলি। গ্রামে এই উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয় দুদিনের “চড়ক মেলা”। সারারাত ধরে চলে অনুষ্ঠান। গ্রামেরই লবাঁধ পুকুরে স্নান করে দেয়াশীরা। চড়ক উৎসব দেখতে সারা রাত ধরে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমে মেটেলা গ্রামে।